বন্দুক হামলার ঘটনায় কল অফ ডিউটির নির্মাতাদের দায়ী করা যাবে না: আইনজীবীর যুক্তি!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংঘটিত বন্দুক হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দায়ের করা মামলায় ভিডিও গেম প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘কল অফ ডিউটি’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস সুপিরিয়র কোর্টে এই মামলার শুনানিতে গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী বলেছেন, তাদের কোম্পানির তৈরি করা গেমের বিষয়বস্তু যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত, তাই এই ঘটনার জন্য তাদের দায়ী করা যায় না।

২০২২ সালের ২৪ মে, টেক্সাসের উভালদে অবস্থিত রব এলিমেন্টারি স্কুলে এক বন্দুকধারীর হামলায় ১৯ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন শিক্ষক নিহত হন।

নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনার জন্য ‘কল অফ ডিউটি’ গেম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাক্টিভিশন এবং সামাজিক মাধ্যম ‘মেটা’র (ইনস্টাগ্রামের মালিক) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

তাদের অভিযোগ, এই কোম্পানিগুলো এমন সব পণ্য তৈরি ও বাজারজাত করে যা ওই কিশোর বন্দুকধারীকে প্রভাবিত করেছে।

আদালতে অ্যাক্টিভিশনের আইনজীবী বেথানি ক্রিস্টোভিচ বিচারককে জানান, ‘সংবিধানের প্রথম সংশোধনী তাদের (বাদীপক্ষের) দাবিকে নাকচ করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্দুক সহিংসতার বিষয়টি অত্যন্ত জটিল, তবে এই মামলার প্রমাণ সে রকম নয়।’

ক্রিস্টোভিচ যুক্তি দেন, আদালত ইতোমধ্যেই রায় দিয়েছে যে কোনো শিল্পী, তা লেখক, সুরকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, কিংবা ভিডিও গেম প্রস্তুতকারক—তাদের তৈরি করা বিষয়বস্তুর কারণে যদি কেউ কোনো অপরাধ করে, তবে তার দায় তারা নিতে বাধ্য নয়।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ‘কল অফ ডিউটি’ শুধু একটি গেম নয়, বরং এটি অস্ত্র বাজারজাত করার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা তাদের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করে।

আইনজীবীরা আদালতের কাছে অ্যাক্টিভিশন এবং অস্ত্র প্রস্তুতকারক বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে হওয়া চুক্তি ও যোগাযোগের প্রমাণ পেশ করেন।

যেখানে দেখা যায়, গেমটিতে অস্ত্রের ব্র্যান্ড নামগুলো সরাসরি উল্লেখ না করে, বরং এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা সহজেই সেগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়।

উভালদে হামলায় নিহত ১০ বছর বয়সী লেক্সি রুবির মা কিম্বার্লি রুবি আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি ঘটনার সঠিক উত্তর জানার জন্য।’

আমরা চাই, এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক, যাতে আমরা আমাদের প্রশ্নের জবাব পাই।

আদালতে বিচারক উইলিয়াম হাইবার্গার জানিয়েছেন, তিনি এখনো কোনো দিকেই ঝুঁকছেন না।

তবে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না বলেও জানান তিনি।

এই মামলার রায় ভবিষ্যতে মিডিয়া এবং তরুণ প্রজন্মের উপর এর প্রভাব নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *