যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে বিদ্যমান বিমান চলাচল সংক্রান্ত চুক্তিকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মেক্সিকো সরকার তাদের অভ্যন্তরীণ রুটে কিছু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর ফলে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলাচলকারী বিমানগুলোর ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে এবং ডেল্টা এয়ারলাইন্স ও অ্যারোমেক্সিকোর মধ্যেকার অংশীদারিত্বের ভবিষ্যৎও এখন হুমকির মুখে।
মার্কিন পরিবহন বিভাগের সেক্রেটারি শান ডাফি শনিবার জানান, মেক্সিকো সরকার তাদের প্রধান বিমানবন্দর, বেনিতো জুয়ারেজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটগুলো সরিয়ে নতুন ফেলিপ অ্যাঞ্জেলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানান্তরিত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তির পরিপন্থী।
ডাফির মতে, এর ফলে মেক্সিকোর বিমান সংস্থাগুলো এক ধরনের সুবিধা পাচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ন্যায্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মেক্সিকোর এই সিদ্ধান্তের কারণে তাদের বিমান সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগ মেক্সিকোর সকল যাত্রী, কার্গো এবং চার্টার বিমান সংস্থাগুলোকে তাদের ফ্লাইটসূচি জমা দিতে এবং সরকারের অনুমোদন নিতে বলেছে। যতক্ষণ না মেক্সিকো সরকার তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছে, ততক্ষণ এই নিয়ম বলবৎ থাকবে।
প্রতি বছর প্রায় ৪ কোটি আমেরিকান মেক্সিকোতে ভ্রমণ করেন। তাদের জন্য মেক্সিকোর আকর্ষণ অনেক।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে ভ্রমণ এবং বাণিজ্য উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, ডেল্টা এয়ারলাইন্স এবং অ্যারোমেক্সিকোর মধ্যেকার অংশীদারিত্ব যদি ভেঙে যায়, তবে এর ফল হবে সুদূরপ্রসারী।
এই দুটি সংস্থার মধ্যেকার চুক্তি অনুযায়ী, তারা প্রায় দুই ডজন রুটে বিমান পরিচালনা করে এবং এর মাধ্যমে উভয় দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি) আসে, যা পর্যটন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
ডেল্টা এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপ তাদের এবং অ্যারোমেক্সিকোর মধ্যেকার অংশীদারিত্বের জন্য ক্ষতিকর হবে। তারা মনে করে, এর ফলে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হবে এবং দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও অসুবিধা সৃষ্টি হবে।
যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যেকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
উভয় দেশের সরকার এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিরোধের দ্রুত সমাধান না হলে তা দুই দেশের অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে, বিমান চলাচল এবং পর্যটন শিল্পে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস