শীতের ছুটিতে কেনাকাটার বাজারে অশনি সংকেত! বাড়ছে কি জিনিসের দাম?

যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন ছুটির কেনাকাটার মৌসুমে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যার কারণ মূলত দেশটির বাণিজ্য নীতি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া শুল্ক নীতির কারণে অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে, সেই সাথে বাড়ছে পণ্যের দাম এবং কমছে পছন্দের জিনিস পাওয়ার সুযোগ।

ডিসেম্বরের উৎসবের কেনাকাটার জন্য প্রস্তুত হতে ব্যবসায়ীরা সাধারণত গ্রীষ্মকালেই পরিকল্পনা শুরু করেন। কিন্তু চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে এবার ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে, কোনো কোনো পণ্যের সরবরাহ কম হতে পারে এবং গ্রাহকদের পছন্দের জিনিস নাও পাওয়া যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন থেকে খেলনা আমদানি করে এমন ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খেলনার প্রায় ৮০ শতাংশই আসে চীন থেকে। খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘দ্য টয় অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রধান নির্বাহী গ্রেগ আহার্ন জানান, সাধারণত এপ্রিল মাস থেকে খেলনা তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুল্কের কারণে এবার তা মে মাসের শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়।

এই শুল্কের কারণে অনেক দোকানে খেলনার সরবরাহ কমে যেতে পারে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, নভেম্বরের মধ্যে তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নাও পেতে পারেন। কেউ কেউ বেশি শুল্কের ঝুঁকি এড়াতে তাদের ব্যবসার আকার ছোট করে দিয়েছেন। আবার, কোনো কোনো ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি খেলনার দোকানের মালিক ডিন স্মিথ জানান, তিনি তার দোকানে কিছু পণ্যের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। তবে তিনি চেষ্টা করছেন যেন গ্রাহকদের ওপর এর বেশি চাপ না পড়ে। অনেক দোকানে এখন থেকেই কিছু পণ্যের মজুত করা হচ্ছে, যা ছুটির মৌসুমে বেশি বিক্রি হয়।

আরেকজন খেলনার দোকানদার হিলারি কী জানান, তার দোকানে বিভিন্ন কোম্পানির খেলনার দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ‘স্কাইলিং’ নামের একটি কোম্পানি তাদের পণ্যের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। হিলারি কী আরও জানান, তার দোকানে ভালো মানের পণ্য রাখার চেষ্টা করেন, তবে এবার শুল্কের কারণে সেই চেষ্টা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্কের হার পরিবর্তন করছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দরের নির্বাহী পরিচালক জেন সেরোকা জানান, ব্যবসায়ীরা এখন তাদের পণ্যের চালান দ্রুত পাঠাচ্ছেন, কারণ তাঁরা আশঙ্কা করছেন, পরে হয়তো শুল্কের হার আরও বাড়তে পারে।

এই পরিস্থিতি ভোক্তাদের জন্য খারাপ হতে পারে। বাজারে পণ্যের সরবরাহ কম থাকতে পারে, পছন্দের জিনিস নাও পাওয়া যেতে পারে এবং দামও বাড়তে পারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিস্থিতি তাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।

বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য নীতির কারণে আগামী ছুটির মৌসুমে কেনাকাটার চিত্র পাল্টে যেতে পারে। পণ্যের অভাব, উচ্চমূল্য এবং পছন্দের জিনিসের অপ্রাপ্যতার কারণে অনেক ক্রেতা হতাশ হতে পারেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *