সুপারম্যানের উড়ান অব্যাহত, বক্স অফিসে সাফল্যের ধারা
নিউ ইয়র্ক, [তারিখ]- বিশ্বজুড়ে সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে চলেছে জেমস গান পরিচালিত ‘সুপারম্যান’। মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহান্তেও উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এই ছবি।
স্টুডিওর হিসাব অনুযায়ী, সিনেমাটি এ সময়ে ৫ কোটি ৭৩ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি ব্যবসা করেছে। একইসঙ্গে, নতুন মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো – ‘আই নো হোয়াট ইউ ডিড লাস্ট সামার’, ‘স্মার্ফস’ এবং ‘এডিংটন’ – সুপারম্যানের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেনি।
সুপারহিরো ঘরানার এই সিনেমাটি মুক্তির প্রথম দুই সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে ৪0 কোটি ৬৮ লক্ষ ডলারের বেশি আয় করেছে, যা ডিসি স্টুডিওজের জন্য একটি দারুণ সূচনা।
এই সাফল্যের ওপর ভর করে, তারা তাদের সিনেমা নির্মাণের কার্যক্রম নতুন করে শুরু করতে চাইছে। দর্শকদের ভালো রেটিং এবং ইতিবাচক পর্যালোচনার কারণে, ২2 কোটি ৫০ লক্ষ ডলার বাজেটের ‘সুপারম্যান’ খুব শীঘ্রই লাভের মুখ দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডিসি স্টুডিওজ-এর পক্ষ থেকে এই সিনেমাটি তাদের ১০ বছরের পরিকল্পনাকে সফল করার চাবিকাঠি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাদের পরবর্তী সিনেমা ‘সুপারগার্ল’ এবং ‘ক্লেফেজ’- মুক্তি পাবে ২০২৬ সালে।
তবে, প্রেক্ষাগৃহে ‘সুপারম্যান’-এর একচ্ছত্র আধিপত্য এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
ইউনিভার্সাল পিকচার্স-এর ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: রিবার্থ’ মুক্তির তৃতীয় সপ্তাহে ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ডলার আয় করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
স্কারলেট জোহানসন অভিনীত ‘জুরাসিক’ সিরিজের সপ্তম সিনেমাটি ‘সুপারম্যান’-এর সঙ্গে ভালোই টক্কর দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে সিনেমাটি ৬৪ কোটি ৮০ লক্ষ ডলারের বেশি ব্যবসা করেছে।
অন্যদিকে, অ্যাপেল স্টুডিওজ এবং ওয়ার্নার ব্রোস-এর ‘এফ১: দ্য মুভি’ আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ ভালো ব্যবসা করছে।
মুক্তির চতুর্থ সপ্তাহে, ব্র্যাড পিট অভিনীত এই রেসিং ড্রামাটি উত্তর আমেরিকায় ৯৬ লক্ষ ডলার এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ ডলার আয় করেছে।
বিশ্বজুড়ে সিনেমাটির মোট আয় ৪6 কোটি ৮ লক্ষ ডলার।
তবে, নতুন মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে সনি পিকচার্স-এর ‘আই নো হোয়াট ইউ ডিড লাস্ট সামার’ এবং প্যারামাউন্ট পিকচার্স-এর ‘স্মার্ফস’-এর ব্যবসা আশানুরূপ হয়নি।
‘আই নো হোয়াট ইউ ডিড লাস্ট সামার’ ১৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা ১৮ মিলিয়ন ডলার বাজেটের একটি সিনেমার জন্য খুব একটা খারাপ ফল নয়, তবে পরিচিত একটি হরর ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য এটি হতাশাজনক।
সিনেমাটি ১৯৯৭ সালের মূল সিনেমার ২৭ বছর পরের ঘটনা নিয়ে তৈরি। ম্যাডেলিন ক্লাইন এবং চেজ সুই ওয়ান্ডার্স অভিনীত কিশোর-কিশোরীরা আবারও একটি গাড়ি দুর্ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ফল ভোগ করে।
অন্যদিকে, ‘স্মার্ফস’ ১১ মিলিয়ন ডলার আয় করে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
এই ছবিতে স্মার্ফেট-এর চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন রিহানা। সমালোচকদের চোখে ছবিটি তেমন ভালো ফল করতে পারেনি।
তবে, দর্শকদের কাছ থেকে ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। ৫৮ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমাটি মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল।
আরি অ্যাস্টারের ‘এডিংটন’ ৪.২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হওয়ার পর থেকেই সিনেমাটি বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই পশ্চিমা ঘরানার ছবিতে জোয়াকিন ফিনিক্স একজন রক্ষণশীল শেরিফের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যিনি একজন উদারপন্থী মেয়রের মুখোমুখি হন।
চলতি বছরের গ্রীষ্মের বক্স অফিস বেশ ভালো যাচ্ছে।
তথ্য প্রদানকারী সংস্থা কমস্কোর-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মের তুলনায় ২০২৪ সালের গ্রীষ্মের বক্স অফিস ১৫.৯% বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সময়ে টিকিট বিক্রি করে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে।
উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসের শীর্ষ ১০ সিনেমার তালিকা:
- সুপারম্যান: ৫ কোটি ৭৩ লক্ষ ডলার
- জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: রিবার্থ: ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ডলার
- আই নো হোয়াট ইউ ডিড লাস্ট সামার: ১ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার
- স্মার্ফস: ১ কোটি ১০ লক্ষ ডলার
- এফ১: দ্য মুভি: ৯৬ লক্ষ ডলার
- হাউ টু ট্রেইন ইউর ড্রাগন: ৫৪ লক্ষ ডলার
- এডিংটন: ৪৩ লক্ষ ডলার
- এলিয়ো: ২০ লক্ষ ডলার
- লিলো অ্যান্ড স্টিচ: ১৫ লক্ষ ডলার
- ২৮ ইয়ার্স লেটার: ১৩ লক্ষ ডলার
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস