গাজায় যুদ্ধ এখনই বন্ধ করতে হবে, ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ ২৫টি দেশের জোরালো আহ্বান। দেশগুলো ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বলেছে। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো এই দাবি জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের চরম দুর্দশা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ সরবরাহ অত্যন্ত অপ্রতুল এবং তা মানবিক মর্যাদার পরিপন্থী।
খাদ্য ও পানির মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে গিয়েও বেসামরিক নাগরিকদের জীবন যাচ্ছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ত্রাণ বিতরণের পদ্ধতি বিপদজনক, যা পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং গাজাবাসীকে তাদের মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে ছিল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। দেশগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে এবং এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমাধানের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো গাজার মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গাজায় বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বসবাস করে, যাদের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তারা বর্তমানে সীমিত ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। বহু মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দী করা হয়।
এদের মধ্যে এখনো ৫০ জন গাজায় বন্দী রয়েছে, যাদের অর্ধেক জীবিত আছে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৯,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অর্ধেকের বেশি। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়টি হামাস সরকারের অংশ, তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হতাহতের হিসাবের জন্য তাদের তথ্যকে নির্ভরযোগ্য মনে করে।
বর্তমানে কাতার-এ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, গাজায় সামরিক অভিযান জোরদার করার মাধ্যমে হামাসের ওপর আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস