৯ বছরের মেয়ের মৃত্যু, বাবার হাতেই খুন! স্তম্ভিত সবাই

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ছুটি কাটাতে আসা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার ৯ বছর বয়সী মেয়ের হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে প্রথমে তিনি পুলিশকে জানালেও, তদন্তে অসঙ্গতি ধরা পড়ে।

পরে একটি পুকুরে শিশুটির মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। সোমবার (স্থানীয় সময়) ৪5 বছর বয়সী লুসিয়ানো ফ্রাটোলিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পুলিশ ক্যাপ্টেন রবার্ট ম্যাককনেল জানান, ফ্রাটোলিনের বিরুদ্ধে হত্যার এবং মরদেহ লুকানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। মন্ট্রিলে বসবাসকারী লুসিয়ানো তার মেয়ে মেলিনা ফ্রাটোলিনের সঙ্গে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাতে লুসিয়ানো ৯১১ নম্বরে ফোন করে জানান, লেক জর্জের কাছে একটি পার্কিং লট থেকে তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর দ্রুত শিশুটিকে খুঁজে বের করার জন্য ‘অ্যাম্বার অ্যালার্ট’ জারি করা হয়।

সাধারণত শিশুদের অপহরণের ঘটনা ঘটলে দ্রুত জনগণের সহায়তা চেয়ে এই অ্যালার্ট জারি করা হয়। তবে, তদন্তে ফ্রাটোলিনের বয়ানে গড়মিল পাওয়া যায়।

শুরুতে তিনি জানান, পার্কিং লটে মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে তিনি জানান, দুইজন লোক একটি সাদা ভ্যানে করে জোর করে মেলিনাকে তুলে নিয়ে গেছে।

তদন্তকারীরা এলাকার একটি ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করেন। তাতে দেখা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে সারাতোগা স্প্রিংস নামক স্থানে বাবা ও মেয়েকে একসঙ্গে দেখা গেছে। এর কিছুক্ষণ পর, মেলিনা তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল এবং সে সময় কোনো উদ্বেগের কথা জানায়নি।

পুলিশের ধারণা, ফোন কলের পরেই সম্ভবত ফ্রাটোলিন তার মেয়েকে হত্যা করে। এরপর তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করেন। রবিবার দুপুরে, লেক জর্জ থেকে প্রায় ৩০ মাইল উত্তরে টিকোন্ডেরোগা এলাকার একটি পুকুরে ডুবন্ত অবস্থায় মেলিনার মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ফ্রাটোলিন সম্ভবত একটি কাঠের গুঁড়ির নিচে মেয়ের মরদেহ লুকিয়ে রেখেছিলেন। পুলিশ আরও জানায়, গত ১১ জুলাই থেকে বাবা ও মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাচ্ছিলেন এবং তাদের মন্ট্রিলে ফেরার কথা ছিল।

মেলিনা তার মায়ের সঙ্গে মন্ট্রিলে বসবাস করত। তাদের মধ্যে ২০১৯ সাল থেকে সম্পর্ক ভালো ছিল না। লুসিয়ানো ফ্রাটোলিন তার ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে নিজেকে ‘স্নেহময় বাবা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

একটি কফি কোম্পানির ওয়েবসাইটে, যা তিনি তৈরি করেছেন বলে জানা যায়, সেখানে লেখা ছিল মেলিনা তার জীবনের আলো। পুলিশ জানিয়েছে, ফ্রাটোলিনের আগে কোনো অপরাধের রেকর্ড ছিল না। এমনকি পারিবারিক সহিংসতা বা নির্যাতনের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন না।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *