চীন ভ্রমণে গিয়ে ফিরতে পারছেন না মার্কিন সরকারি কর্মচারী!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন সরকারি কর্মীকে চীন ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত সফরে সেখানে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এ কথা জানিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মার্কিন নাগরিকদের দেশ ছাড়তে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

মার্কিন পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক অফিসের ওই কর্মীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এই অফিসটি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অধীনে কাজ করে। পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি সমাধানের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, “মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়।

সাধারণত, চীন সরকার কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চললে, বিশেষ করে ব্যবসায়িক বিরোধের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তাদের দেশ ত্যাগে বাধা দেয়। তবে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, তারা চীনা নাগরিক এবং বিদেশি নাগরিকদেরও স্বেচ্ছাচারীভাবে দেশ ছাড়তে বাধা দিয়ে থাকে।

চীনের এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের চীন ভ্রমণে পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছিল। যদিও গত নভেম্বরে সেই ভ্রমণ সতর্কতা কিছুটা শিথিল করা হয়, কারণ চীন তখন দীর্ঘদিন আটক থাকা তিনজন মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেয়।

সম্প্রতি, এমন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের এক কর্মী, যিনি চীনে কর্মরত ছিলেন, তাকেও দেশ ছাড়তে বাধা দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটি চীনে সব ধরনের ভ্রমণ স্থগিত করেছে।

ওয়েলস ফার্গো ব্যাংক মঙ্গলবার জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং তাদের কর্মীর দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কুও জিয়াকুন জানিয়েছেন, ওয়েলস ফার্গোর ওই কর্মী একটি ফৌজদারি মামলার সঙ্গে জড়িত এবং তাকে আইন অনুযায়ী দেশ ত্যাগে বাধা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, এটি একটি ব্যক্তিগত বিচারিক বিষয়। চীন সব সময়ই সব দেশ থেকে আসা মানুষদের স্বাগত জানায় এবং তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দেয়। সেই সঙ্গে আইনের মাধ্যমে তাদের অধিকার ও স্বার্থ নিশ্চিত করে।

মার্কিন সরকারি কর্মীর ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কুও জিয়াকুন বলেন, “আমার কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। চীন আইনের শাসনকে সমর্থন করে এবং আইন মেনেই প্রবেশ ও প্রস্থানের বিষয়টি পরিচালনা করে।

এর আগেও বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক চীনের এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছেন। জানা যায়, ২০২০ সালে চীনে বেড়াতে যাওয়া দুই মার্কিন নাগরিক তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সেখানে আটকা পড়েন। তিন বছর পর ২০২১ সালে তাদের চীন ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *