উত্তরাধিকার কর: মৃতদের জন্য বিশাল সুবিধা! নতুন আইনে কী?

যুক্তরাষ্ট্রে উত্তরাধিকার কর আইনে পরিবর্তনের ফলে দেশটির ধনী ব্যক্তিদের জন্য করমুক্ত সুবিধা আরও বাড়ছে। সম্প্রতি পাস হওয়া একটি নতুন আইনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর অনুযায়ী, এই আইনের ফলে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির ওপর করের নিয়মকানুন আরও শিথিল করা হয়েছে, যা মূলত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল অ্যাক্ট’ (One Big Beautiful Act) নামে পরিচিত।

নতুন আইন অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে একজন ব্যক্তি প্রায় ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, প্রায় ১৬৫ কোটি টাকার কাছাকাছি) পর্যন্ত সম্পদ উত্তরাধিকার সূত্রে হস্তান্তর করতে পারবেন, যার ওপর কোনো কর দিতে হবে না। এই সীমা পরবর্তীতে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

বর্তমানে এই সীমা ১৩.৯৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা)। বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দ্বিগুণ হবে, অর্থাৎ তারা প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত করমুক্তভাবে তাদের সম্পদ হস্তান্তর করতে পারবেন।

উত্তরাধিকার কর মূলত একটি দেশের ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া সম্পদের ওপর ধার্য করা হয়। এই কর থেকে প্রাপ্ত অর্থ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

এই আইনের ফলে, খুব কম সংখ্যক মানুষের ওপর উত্তরাধিকার কর আরোপ করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালে যেখানে মোট মৃতের ২.১ শতাংশের বেশি মানুষের ওপর এই কর প্রযোজ্য ছিল, সেখানে ২০১৯ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ০.০৭ শতাংশে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব খাতে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকে এই আইনের কারণে প্রায় ২১২ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব কম আসবে।

এই পরিবর্তনের ফলে সমাজের ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যেও উত্তরাধিকার কর বিদ্যমান রয়েছে, তবে সেগুলোর নিয়মকানুন ফেডারেল আইন থেকে ভিন্ন।

এই রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কানেকটিকাট, হাওয়াই, ইলিনয়, মেইন, ম্যাসাচুসেটস, মিনেসোটা, নিউ ইয়র্ক, ওরেগন, রোড আইল্যান্ড, ভারমন্ট এবং ওয়াশিংটন ডিসি। এই রাজ্যগুলোতে করের হার এবং ছাড়ের পরিমাণ বিভিন্ন রকম।

উত্তরাধিকার কর বিষয়ক এই পরিবর্তন একটি জটিল বিষয়, যা অর্থনীতির ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের স্বচ্ছতা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *