বদলাচ্ছে অনুদানের হিসাব! করদাতাদের জন্য দুঃসংবাদ?

যুক্তরাষ্ট্রে দাতব্য অনুদান বিষয়ক করের নিয়মে আসছে পরিবর্তন, যা ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হতে চলেছে। এই পরিবর্তনগুলো মার্কিন করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য হবে, তবে বিশ্বব্যাপী করনীতি সম্পর্কে ধারণা লাভের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব রয়েছে।

সাধারণত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করদাতাদের দুটি প্রধান উপায়ে কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকে: একটি হলো স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (standard deduction), যেখানে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ করযোগ্য আয় থেকে বাদ দেওয়া যায়। অন্যটি হলো আইটেমাইজড ডিডাকশন (itemized deduction), যেখানে বিভিন্ন ধরনের খরচ, যেমন – স্বাস্থ্য বীমা, শিক্ষা অথবা দাতব্য অনুদান, হিসাব করে করের পরিমাণ কমানো যায়।

যদি কোনো ব্যক্তির মোট খরচ স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চেয়ে বেশি হয়, তবে তিনি আইটেমাইজড ডিডাকশন বেছে নিতে পারেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যারা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন গ্রহণ করেন, অর্থাৎ যাদের আইটেমাইজড ডিডাকশন করার সুযোগ নেই, তারা নগদ অর্থ অনুদান বাবদ ১,০০০ মার্কিন ডলার (একক) অথবা ২,০০০ মার্কিন ডলার (যৌথভাবে) পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন। তবে এই সুবিধা কেবল সরাসরি কোনো যোগ্য 501(c)(3) দাতব্য সংস্থাকে দেওয়া নগদ দানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

অন্যদিকে, যারা আইটেমাইজড ডিডাকশন করেন, তাদের জন্য নিয়মটি ভিন্ন। ২০২৬ সাল থেকে তারা তাদের মোট আয়ের ০.৫ শতাংশের বেশি নগদ অনুদান দিলে, সেই অতিরিক্ত অর্থের ওপর কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন।

উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যক্তির সমন্বিত মোট আয় (Adjusted Gross Income – AGI) হয় ১ লক্ষ মার্কিন ডলার, তবে তিনি নগদ অনুদান থেকে কেবল সেই পরিমাণ অর্থই বাদ দিতে পারবেন যা ৫০০ মার্কিন ডলারের (১ লক্ষের ০.৫%) বেশি। অর্থাৎ, যদি তিনি ২,০০০ মার্কিন ডলার অনুদান দেন, তবে তিনি ১,৫০০ মার্কিন ডলারের ওপর কর ছাড় পাবেন।

তবে, আইটেমাইজড ডিডাকশন গ্রহণকারীদের জন্য আরেকটি নিয়ম বহাল থাকবে। এই নিয়ম অনুযায়ী, তারা তাদের এজিআই-এর ৬০ শতাংশের বেশি নগদ অনুদান হিসেবে ছাড় নিতে পারবেন না। এই অতিরিক্ত অনুদান পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, উচ্চ-আয়ের করদাতাদের ক্ষেত্রেও একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাদের করযোগ্য আয় বেশি, তাদের জন্য কর ছাড়ের পরিমাণ সীমিত করা হবে।

অর্থাৎ, যাদের আয় বেশি হওয়ার কারণে তারা ৩৭ শতাংশ হারে কর দেন, তাদের কর ছাড়ের হিসাব করা হবে যেন তারা ৩৫ শতাংশ করের আওতায় রয়েছেন।

এছাড়াও, যারা আইটেমাইজড ডিডাকশন করেন, তাদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র বা গৃহস্থালীর জিনিসপত্রের মতো অনুদানের ক্ষেত্রেও আয়ের ০.৫ শতাংশের সীমা প্রযোজ্য হবে। তবে যারা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন গ্রহণ করেন, তারা এই ধরনের অনুদানের জন্য কোনো ছাড় পাবেন না, কারণ তাদের জন্য নগদ দানের ১,০০০/২,০০০ মার্কিন ডলারের সীমা প্রযোজ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কর পরিবর্তনগুলো মূলত দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়, তবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে প্রায়ই করের নিয়মকানুন পরিবর্তন করা হয়, যা অন্যান্য দেশের নীতি-নির্ধারকদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে।

এই ধরনের পরিবর্তনগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে করনীতি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *