মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, যা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে পরিচিত, তার কার্যক্রম পর্যালোচনার দাবি তুলেছেন দেশটির ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সম্ভবত ১৯৯০ দশকের ডট-কম বুমের মতোই এক বিরাট অর্থনৈতিক উন্নতির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, যা সাধারণত ‘ফেড’ নামে পরিচিত, মার্কিন অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর প্রধান কাজ হল মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে ফেড, সুদের হার নির্ধারণ করে থাকে। এর মাধ্যমে তারা বাজারে অর্থের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চেষ্টা করে।
বেসেন্টের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence – AI) অভাবনীয় উন্নতির কারণে ২০২৬ সাল নাগাদ অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রযুক্তিখাতে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা মনে করেন, এআই প্রযুক্তি খুব দ্রুতগতিতে আসছে এবং এর ফলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান কমতে পারে।
বেসেন্টের ধারণা, যদি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে সুদের হার কমানো যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং সুদের হার কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন।
যদিও ফেডারেল রিজার্ভ একটি স্বাধীন সংস্থা, যা রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে কাজ করে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বেসেন্ট মনে করেন, ফেডারেল রিজার্ভের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখা উচিত।
অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভের সদর দপ্তর সংস্কারের জন্য প্রায় ২৫০ কোটি ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ২৬ হাজার ৬২৫ কোটি বাংলাদেশী টাকা) ব্যয়ের বিষয়টিও বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এই সংস্কারের ফলে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয়েছে এবং ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান কংগ্রেসকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভের নীতি এবং সুদের হারে পরিবর্তন বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
এর ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। তবে এর সরাসরি প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা কঠিন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি নিয়ে বিতর্ক ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: CNN