অবশেষে! ট্রাম্পের নাগরিকত্ব আইন রুখল আদালত, তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমি সূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের ট্রাম্পের চেষ্টা, নিম্ন আদালতের বাধায় ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার যে বিধান, তা বাতিলের প্রচেষ্টা আবারও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির নিম্ন আদালতগুলো এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।

২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার আগে, ট্রাম্প প্রশাসন এমন একটি নির্বাহী আদেশ জারি করতে চেয়েছিল, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসী অথবা স্বল্প মেয়াদে বসবাসকারীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যেত। তবে, দেশটির বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম হলেই তিনি সেখানকার নাগরিক হিসেবে গণ্য হন।

এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয়। বিভিন্ন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এবং নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো এর বিরোধিতা করে। তাদের যুক্তি ছিল, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী।

নিম্ন আদালতগুলোতে হওয়া শুনানিতে বিচারকরা ট্রাম্পের এই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

সম্প্রতি, দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে নিম্ন আদালতগুলোকে এই ধরনের স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনা করতে বলে। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে এই আইনটি কার্যকর করার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু এরই মধ্যে বিভিন্ন ফেডারেল আদালত ট্রাম্পের এই নীতির বিরুদ্ধে নতুন করে রায় দিয়েছে।

নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটি ফেডারেল আদালত, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (American Civil Liberties Union – ACLU) দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে এই আদেশকে সারা দেশে কার্যকর করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বোস্টনের একটি আদালতও এই বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রায় দিয়েছে।

আদালত জানায়, এই নীতি সংবিধানের পরিপন্থী এবং এর মাধ্যমে রাজ্যের বাসিন্দাদের ক্ষতি হবে।

আদালতের এমন সিদ্ধান্তের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে এই মুহূর্তে বিতর্কিত নীতিটি কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন মূলত এই বিষয়টিকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গিয়েছিল, যাতে নিম্ন আদালতের ক্ষমতা খর্ব করা যায়।

তারা সরাসরি এই নীতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার পরিবর্তে, কিভাবে এটি কার্যকর করা হবে, সেই বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়।

আদালতের একের পর এক বাধার কারণে ট্রাম্পের এই বিতর্কিত পদক্ষেপ কার্যত ভেস্তে যাওয়ার পথে। বর্তমানে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর শুনানির প্রক্রিয়া চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও প্রতিকূল রায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো একদিকে যেমন অভিবাসীদের অধিকারের প্রশ্ন তোলে, তেমনিভাবে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য উন্নত জীবনের সুযোগের বিষয়টিও জড়িত।

বাংলাদেশের অনেক মানুষ উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে চান। এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক যেকোনো নীতি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *