এপস্টাইনের ষড়যন্ত্র: ট্রাম্পের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর পরিণতি?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবন বর্তমানে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রতি তাঁর আগ্রহ এবং সেগুলোকে সমর্থন জানানো এখন তাঁর বিরুদ্ধেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিশেষ করে, কুখ্যাত ফাইনান্সার জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলো নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সম্প্রতি, এক জনমত জরিপে দেখা গেছে যে, আমেরিকার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ, যাদের মধ্যে রিপাবলিকান সমর্থকেরাও রয়েছেন, মনে করেন এপস্টাইনের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকা সরকার গোপন করছে। এপস্টাইনের বিরুদ্ধে আনা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এবং তাঁর প্রভাবশালী বন্ধুদের নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলো এখনো জনগণের মধ্যে কৌতূহল জিইয়ে রেখেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাস স্থাপন করেছেন এবং সেগুলোকে জনসম্মুখে এনেছেন। বারাক ওবামার জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক (“বার্থারিজম”) থেকে শুরু করে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ—তাঁর এসব কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ পরিচিত।

সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো সমাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং মূলধারার রাজনীতিতে এর প্রভাব বেড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই কৌশল এখন তাঁর জন্যই বিপদ ডেকে আনছে। কারণ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে “গভীর রাষ্ট্র”-এর (ডিপ স্টেট) বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন।

এখন যখন তিনি নিজেই হোয়াইট হাউসে, তখন তাঁর পুরনো অভিযোগগুলোই তাঁর জন্য সমস্যা তৈরি করছে। সরকার যদি এপস্টাইন মামলার বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করে, তবে তা জনগণের মধ্যে আরও বেশি সন্দেহের জন্ম দেবে।

ট্রাম্প অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্য ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অবতারণা করছেন। তিনি ওবামার বিরুদ্ধে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন, যা পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তি দুর্বল করতে পারে এবং জনসাধারণের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ আরও বাড়াতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের পুরনো কর্মকাণ্ড এখন তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কারণ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে যে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আগুনে ঘি ঢেলেছেন, সেই আগুন এখন হয়তো তাঁকে পোড়াতে শুরু করেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *