জেরাল্ড নাডলারের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ছেন তরুণ, আলোচনার ঝড়!

যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রবীণ কংগ্রেসম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত হচ্ছেন এক তরুণ। নিউইয়র্কের দীর্ঘদিনের কংগ্রেসম্যান জেরি ন্যাডলারের (৭৮) আসনে আগামী নির্বাচনে লড়তে চান ২৬ বছর বয়সী লিয়াম এলকিন্ড।

কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহ করার জন্য একটি সংস্থা তৈরি করেছিলেন এলকিন্ড। তিনি মনে করেন, ন্যাডলারের এখন সেই উদ্যম নেই যা ডেমোক্র্যাটদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোকাবিলা করতে এবং নিজেদের দল পুনর্গঠন করতে প্রয়োজন।

এলকিন্ডের প্রচারণার মূল সুর হলো, ন্যাডলারের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি সম্মান রেখে ভবিষ্যতের জন্য পথ তৈরি করা। তিনি সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, “জেরি ন্যাডলারের মতো একজন মানুষের ৪৯ বছরের রাজনৈতিক কর্মজীবনের প্রতি সম্মান জানানো উচিত, আবার একইসঙ্গে তাকে ভবিষ্যতের দিকে একটি সেতু তৈরি করতে অনুরোধ করা উচিত।”

এলকিন্ডের প্রচারণার জন্য এরই মধ্যে লিঙ্কডইন-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যানসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ন্যাডলারের সমর্থকেরা বলছেন, তিনি এখনো একজন সক্রিয় এবং কার্যকর জনপ্রতিনিধি। তারা তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং এলাকার মানুষের প্রতি আনুগত্যের কথা উল্লেখ করেন। তারা আরও মনে করেন, এলকিন্ডের এই চ্যালেঞ্জ মূলত রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের ফল।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, স্থানীয় রাজনীতির কিছু দিকও আলোচনায় এসেছে। এলকিন্ড, যিনি বর্তমানে ম্যানহাটনের আপার ওয়েস্ট সাইডে বসবাস করেন, প্রচারণার সুবিধার্থে শীঘ্রই তার ভাইয়ের সাথে একই এলাকায় থাকতে যাচ্ছেন।

তিনি বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন এবং তার গবেষণার বিষয় হলো নির্বাচনী সংস্কারের প্রভাব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এলকিন্ডের এই চ্যালেঞ্জ শুধু একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়, বরং এটি প্রজন্মের পরিবর্তনের একটি ইঙ্গিত। তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা চান নতুন নেতৃত্ব, যারা তাদের উদ্বেগের সঙ্গে পরিচিত এবং তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।

এলকিন্ডের উত্থান সেই পরিবর্তনেরই অংশ। তবে, এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু বয়স বা নতুনত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

এটি আদর্শগত ভিন্নতা এবং রাজনৈতিক কৌশলের প্রশ্নও সামনে নিয়ে এসেছে। এলকিন্ড ডেমোক্রেটিক পার্টির কট্টর বামপন্থী অংশের কিছু নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন।

ন্যাডলারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “কংগ্রেসম্যান ন্যাডলার তার কাজের মাধ্যমে জনগণের কাছে প্রমাণ রেখেছেন। তিনি সবসময় জনগণের জন্য কাজ করে গেছেন।”

এই ঘটনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে, প্রবীণ রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং তাদের প্রতি জনগণের আস্থা, অন্যদিকে, তরুণ প্রজন্মের নতুন নেতৃত্ব এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা।

এখন দেখার বিষয়, ভোটাররা পরিবর্তনের এই হাওয়ায় কতটা সাড়া দেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *