বিমান ও হেলিকপ্টার সংঘর্ষ: ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তদন্তের চূড়ান্ত দিন!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। গত জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসি-র কাছে একটি সামরিক হেলিকপ্টার এবং একটি বাণিজ্যিক বিমানের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় বিমানের ৬৭ জন যাত্রী নিহত হন।

এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB) তাদের গণশুনানি শেষ করতে যাচ্ছে।

শুনানিতে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো সামরিক হেলিকপ্টারটির নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতায় ওড়া। এছাড়া, বিমানবন্দরের কাছাকাছি ঘন ঘন হেলিকপ্টারের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগও উঠেছে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA)-কে কয়েক বছর আগে এ বিষয়ে সতর্ক করা হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার সময় পাইলটদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব ছিল। রাতের বেলা ‘ভিজ্যুয়াল সেপারেশন’ বা দৃষ্টির উপর নির্ভর করে বিমান ও হেলিকপ্টার চালানোর প্রবণতাও দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

ঘটনার দিন, ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের পাইলটদের বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের নির্দেশ শুনতে সমস্যা হয়েছিল। এছাড়া, সামরিক হেলিকপ্টারগুলো প্রায়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ লোকেশন শনাক্তকরণ ব্যবস্থা বন্ধ করে রাখত, যা অন্য বিমানের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারতো।

মেট্রো এভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা, রিক ড্রেসলার, যিনি নিজেও একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা বৈমানিক, জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন ডিসি-র আকাশসীমায় সামরিক হেলিকপ্টার ওড়ার বিষয়ে বেসামরিক পাইলটদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। তার মতে, সামরিক পাইলটদের এই অঞ্চলের জটিল আকাশ সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা থাকে না, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।

দুর্ঘটনার সময় ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের পাইলটরা বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তবে, তারা টাওয়ারের কিছু নির্দেশনা শুনতে পাননি।

এছাড়া, দুর্ঘটনার কয়েক মুহূর্ত আগে হেলিকপ্টারের একজন প্রশিক্ষক পাইলটকে বাম দিকে মোড় নিতে বলেন, কিন্তু ততক্ষণে হয়তো অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে হলে বিমান ও হেলিকপ্টার চলাচলের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং পাইলটদের মধ্যে উপযুক্ত যোগাযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া, সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং আকাশসীমা সম্পর্কে তাদের ধারণা আরও বাড়াতে হবে।

এই দুর্ঘটনার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আগামী বছর প্রকাশ করা হবে। এই ঘটনার পর বিমান নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে এবং ভবিষ্যতে আকাশ পথে ভ্রমণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হতে হবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *