মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর, পেন্টাগন, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে “গোল্ডেন ডোম” নামের একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রথম বড় ধরনের পরীক্ষার আয়োজন করতে যাচ্ছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো, মহাশূন্য থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার একটি ব্যবস্থা তৈরি করা, যা সম্ভবত কয়েকশ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে পারে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের তিন বছরের মধ্যে এই ব্যবস্থা তৈরি করার কথা রয়েছে।
সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য এটি একটি সময়-নির্ধারিত চ্যালেঞ্জ, কারণ তাঁদের প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা সত্যিই এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটি বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম। পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে।
সামরিক কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নির্বাচনের আগে এই পরীক্ষা সম্পন্ন করার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক ফল দেখানোর সুযোগ তৈরি হবে।
“গোল্ডেন ডোম” মূলত একটি মহাকাশ-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা। এটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে পারবে।
এই প্রকল্পের জন্য এরই মধ্যে ২৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর চূড়ান্ত খরচ কয়েকশ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সংস্থা (Missile Defense Agency – MDA) এই পরীক্ষার পরিচালনা করবে এবং এর নাম দেওয়া হয়েছে FTI-X। ‘FTI’ -এর অর্থ হলো ‘ফ্লাইট টেস্ট ইন্টিগ্রেটেড’।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে “গোল্ডেন ডোম”-এর বিভিন্ন সেন্সর এবং অস্ত্র ব্যবস্থা একসঙ্গে কাজ করে একাধিক লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে পারবে কিনা, তা যাচাই করা হবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এত দ্রুত এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন বেশ কঠিন। কারণ, মহাকাশে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের ধারণাটি নিয়ে কয়েক দশক ধরে গবেষণা চললেও এখনো পর্যন্ত তা পুরোপুরি সফল হয়নি।
এই প্রযুক্তি তৈরি করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় উপগ্রহের সংখ্যাও অনেক বেশি হতে পারে।
এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কোম্পানি, যেমন- স্পেসএক্স, আন্ডুরিল এবং পালাান্টিরের মতো সংস্থাগুলো চুক্তি পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে, এই প্রকল্পের তদারকি নিয়ে কিছু উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ, এই প্রকল্পের জন্য প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, সঠিকভাবে পরীক্ষা এবং তদারকির অভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হলে তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কৌশলগত অবস্থানেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: CNN