মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: রিপাবলিকানদের প্রস্তুতি
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখনো অনেক দূরে, কিন্তু এরই মধ্যে রিপাবলিকান দল তাদের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
ডেমোক্র্যাটরা যেমন তাদের কৌশল তৈরি করছে, তেমনি রিপাবলিকানরাও তাদের পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত।
তবে ডেমোক্র্যাটদের থেকে রিপাবলিকানদের চ্যালেঞ্জটা একটু ভিন্ন।
তাদের প্রধান সমস্যা হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া।
ট্রাম্প এখনো দলের মধ্যে প্রভাবশালী, তাই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তার সমর্থন আদায়ের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৮ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম শোনা যাচ্ছে।
তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভাইস প্রেসিডেন্ট) জে.ডি. ভেন্স।
এছাড়াও, সিনেটর মার্কো রুবিও এবং টেক্সাসের গভর্নর (গভর্নর) গ্রেগ অ্যাবটও আলোচনায় রয়েছেন।
এদের বাইরে আরও কয়েকজন গভর্নর এবং সিনেটরও এই দৌড়ে শামিল হতে পারেন।
রিপাবলিকানদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তারা কিভাবে ট্রাম্পের সমর্থন ধরে রাখবেন।
কারণ, ট্রাম্প এখনো দলের মধ্যে জনপ্রিয় এবং তার সমর্থনের ওপর অনেক প্রার্থীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।
সেক্ষেত্রে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের ট্রাম্পের নীতি ও আদর্শের প্রতি সমর্থন জানানোটা জরুরি।
তবে একই সঙ্গে, নিজেদের স্বকীয়তা প্রমাণ করাটাও তাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।
নির্বাচনের প্রাথমিক পর্ব বা প্রাইমারি (Primary) নির্বাচনের সময়সূচী নিয়েও দলটির মধ্যে আলোচনা চলছে।
সাধারণত, রিপাবলিকান দল তাদের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য আইওয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার, সাউথ ক্যারোলাইনা এবং নেভাদায় প্রাইমারি নির্বাচন করে থাকে।
তবে এবার এই সময়সূচীতে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ইতিমধ্যেই, সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী প্রাইমারি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
তারা বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন এবং তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
এদের মধ্যে ভার্জিনিয়ার গভর্নর (গভর্নর) গ্লেন ইয়ংকিন, আরকানসাসের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স, এবং কেনটাকি থেকে নির্বাচিত সিনেটর র্যান্ড পল উল্লেখযোগ্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জে.ডি. ভেন্স ট্রাম্পের উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রাখেন।
তবে মার্কো রুবিও-রও সম্ভাবনা রয়েছে।
কারণ, তিনি এর আগে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এছাড়া, টেড ক্রুজ, যিনি ২০১৬ সালের আইওয়া ককাসে (Caucus) ট্রাম্পকে পরাজিত করেছিলেন, তিনিও আবার প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
রিপাবলিকান দলের আদর্শগত অবস্থান নিয়েও আলোচনা চলছে।
ট্রাম্পের আমলে দলটি কিছুটা রক্ষণশীলতার দিকে ঝুঁকেছে।
এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্পের পরবর্তী সময়ে দলের আদর্শগত অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা।
সম্ভবত, দলের নেতারা এমন একজনকে চাইবেন যিনি ট্রাম্পের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে পারবেন, আবার নিজস্ব কিছু নীতিও তুলে ধরতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০২৮ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে ট্রাম্পের প্রভাব।
যদি ট্রাম্প আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেন, তাহলে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে।
অন্যদিকে, যদি ট্রাম্প নির্বাচনে অংশ না নেন, তাহলে দলের প্রার্থীরা তাদের নিজস্ব এজেন্ডা নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারবেন।
তবে, এখনো পর্যন্ত কোনো রিপাবলিকান নেতাই ট্রাম্প থেকে খুব বেশি দূরে সরে যাচ্ছেন না।
তথ্যসূত্র: সিএনএন