যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে, নিকারাগুয়ার এক অভিবাসী পরিবার এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। রবার্তো রেইয়েস নামের ওই ব্যক্তি এবং তার পরিবারের সদস্যরা—স্ত্রী, তিনটি সন্তান ও শাশুড়ি—বর্তমানে তাদের ফন্টানার অ্যাপার্টমেন্টে অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছেন।
তাদের এই উদ্বেগের কারণ হলো, সম্প্রতি তিনি যখন কাজে যাচ্ছিলেন, তখন ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর এজেন্টদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়েছিলেন।
জানা গেছে, রেইয়েস প্রায় তিন বছর আগে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য নিকারাগুয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। এখন তিনি ও তার পরিবার তাদের আটকা পড়ার ভয়ে ভীত।
তাদের আশঙ্কা, তাদের আটক করা হতে পারে এবং সন্তানদের কাছ থেকে তাদের আলাদা করে দেওয়া হতে পারে। রেইয়েস জানান, তাদের প্রতিবেশী এবং স্থানীয় একটি ঘটনার সূত্রে তার বিরুদ্ধে ভুল অভিযোগ আনা হয়েছিল, তবে সেই মামলা খারিজ হয়ে গেছে।
ঘটনার দিন, রেইয়েস যখন অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন, তখনই সাদা রঙের চারটি গাড়ি এসে তাকে ঘিরে ধরে। তিনি গাড়ি থেকে একজন ইমিগ্রেশন অফিসারের নামতে দেখেন।
নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে, তিনি দ্রুত গাড়িগুলোর ফাঁক গলে পালিয়ে যান। পালানোর সময় তিনি তার ওয়ালেট ও গাড়ির চাবি ফেলে যান। রেইয়েস অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসার পর তার স্ত্রী ও মেয়েকে দরজা খুলে দিতে বলেন, আর এজেন্টরা তখনও তার পিছু নিয়ে আসছিল।
বর্তমানে, রেইয়েসের পরিবারটি তাদের অ্যাপার্টমেন্টে আটকা পড়েছে। তারা কাজে যেতে পারছেন না, এমনকি তাদের সন্তানরাও স্কুলে যেতে পারছে না।
রইয়েসের শাশুড়ি ফুসফুসের অস্ত্রোপচার থেকে সেরে উঠছেন, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়ারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। পরিবারটির মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও এর প্রভাব পড়েছে।
ঘরের দরজার সামান্য শব্দ হলেও তারা এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
এদিকে, স্থানীয় একটি সংগঠন, ইনল্যান্ড কোয়ালিশন ফর ইমিগ্রেন্ট জাস্টিস, পরিবারটিকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করছে। তারা রেইয়েস পরিবারকে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে সাহায্য করা যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে।
রইয়েস জানিয়েছেন, তিনি আইনিভাবে কাজ করতে এবং তার সন্তানদের জন্য ভালোভাবে জীবন ধারণ করতে চান।
আইস-এর পক্ষ থেকে রেইয়েসকে একজন “বিপজ্জনক অপরাধী” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তবে রেইয়েস জোর দিয়ে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা।
তথ্য সূত্র: সিএনএন