ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জার্মানির রাজধানী বার্লিনে পৌঁছেছেন। তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রাংক-ওয়াল্টার স্টাইনমায়ারের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আসন্ন বৈঠকের আগে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে একটি সমন্বিত অবস্থান তৈরি করা। জার্মান সরকার সূত্রে জানা গেছে, বুধবারের এই বৈঠকে অন্যান্য ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দও উপস্থিত থাকবেন।
আগামী সপ্তাহে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ইউক্রেনের নেতারা উদ্বিগ্ন, কারণ তাদের আশঙ্কা, এই আলোচনা থেকে তাদের দূরে রাখা হতে পারে।
তাদের ভয়, ট্রাম্প হয়তো পুতিনের সঙ্গে এমন কিছু বিষয়ে সমঝোতা করতে পারেন যা তাদের স্বার্থের পরিপন্থী।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প সম্ভবত ইউক্রেনকে কিছু ভূমি ছাড় দিতে বলতে পারেন। এমনকি রাশিয়াকেও কিছু অঞ্চলের বিনিময়ে রাজি করাতে পারেন তিনি।
তবে ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, পুতিন যদি ইউক্রেনে জয়ী হন, তবে তিনি এরপর ইউরোপের অন্য কোনো দেশের দিকে নজর দিতে পারেন।
জেলেনস্কি এর আগে বলেছিলেন, পুতিন চান ইউক্রেন যেন দোনেৎস্ক অঞ্চলের অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়। তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইউক্রেন কোনো অবস্থাতেই তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না। এমনটা হলে তা হবে অসাংবিধানিক এবং ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণের পথ খুলে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে, তাতে ইউক্রেনের প্রধান দাবিগুলো এখনো বিবেচনা করা হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে নিজেদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা এবং ইউরোপকে আলোচনার টেবিলে অন্তর্ভুক্ত করা।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ লাভের সম্ভাবনা কমিয়ে দেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা মনে করেন, ট্রাম্প সম্ভবত ইউক্রেনে শুধু একটি যুদ্ধবিরতি দেখতে চান। তার বৃহত্তর লক্ষ্য হলো, রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানো এবং পুতিনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা।
এছাড়া, তিনি প্রায়ই তার ন্যাটো মিত্রদের প্রতিরক্ষা ব্যয় নিয়ে চাপ সৃষ্টি করেন এবং বাণিজ্য আলোচনায়ও কঠোর অবস্থান নেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কারণ দেখিয়ে ইইউ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস