শেয়ার বাজার: লাফিয়ে বাড়ছে সূচক, সুদের হার কমার সম্ভাবনা!

শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতি, মার্কিন বাজারে নতুন রেকর্ড, সুদ হার কমার আশায় বিনিয়োগকারীদের উল্লাস।

আন্তর্জাতিক বাজারে বুধবার শেয়ারের দামে বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যার মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার ইঙ্গিত এবং সুদ হার কমানোর সম্ভাবনা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি সামান্য হ্রাস পাওয়ার ফলে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে। এই কারণে S&P 500 সূচক তার আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, Dow Jones Industrial Average এবং Nasdaq-ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের বিরতি এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা বাজারের এই তেজি ভাবের প্রধান কারণ।

জাপানের শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। টোকিওর বেঞ্চমার্ক Nikkei 225 সূচক আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে আরও বেড়েছে। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাপানি পণ্য আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখার সিদ্ধান্ত। এর ফলে কম্পিউটার চিপ প্রস্তুতকারক এবং অন্যান্য রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের চাহিদা বেড়েছে।

ইউরোপের বাজারেও শেয়ারের দাম বেড়েছে। জার্মানির DAX সূচক ০.৮ শতাংশ এবং ফ্রান্সের CAC 40 সূচক ০.৪ শতাংশ বেড়েছে। ব্রিটেনের FTSE 100 সূচক সামান্য বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করেছে।

এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। হংকংয়ের Hang Seng সূচক ২.৬ শতাংশ এবং সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ০.৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়ার Kospi এবং থাইল্যান্ডের SET সূচকও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাংক অফ থাইল্যান্ড তাদের মূল সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমিয়ে ১.৫ শতাংশ করেছে, যা বাজারের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি জুলাই মাসে ২.৭ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে, যা আগের মাসের সমান এবং অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য কম। এর ফলে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর আরও বেশি সুযোগ পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সুদের হার কমলে বিনিয়োগের খরচ কমবে, যা ব্যবসা এবং পরিবারের জন্য ঋণ নেওয়া সহজ করবে।

তবে, কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি টেকসই নাও হতে পারে। কারণ শেয়ার বাজারের এই উত্থান কোম্পানির মুনাফার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের (Crude oil) দাম সামান্য কমে ব্যারেল প্রতি ৬২.৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ছিল ৬৫.৯২ ডলার। অন্যদিকে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর কমেছে, যেখানে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *