স্বাস্থ্য বিষয়ক নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, অতিরিক্ত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা আলুর চপ জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে যারা সপ্তাহে তিনবারের বেশি এই ধরনের খাবার খান, তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়।
এই গবেষণার ফল সম্প্রতি ‘বিএমজে’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমান সময়ে ফাস্ট ফুডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, এবং এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়াবেটিসের সমস্যা। আমাদের দেশেও রাস্তার ধারে বা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো ভাজা খাবারের চাহিদা অনেক।
তাই এই গবেষণা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে ১ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি মানুষের খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতেন, তাদের মধ্যে অন্যদের চেয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা ২০ শতাংশ বেশি ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো খাবার আসলে ‘আলট্রা-প্রসেসড’ বা অতি-প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, যা স্বাস্থ্যকর নয়।
পুষ্টিবিদদের মতে, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করার সময় আলু অতিরিক্ত তেলে ভাজা হয়, ফলে এর ক্যালোরির পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়া, এই খাবারে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে।
ভাজার সময় তেলের পুনঃব্যবহারের কারণেও অনেক সময় ক্ষতিকর উপাদান তৈরি হতে পারে।
তবে, এর মানে এই নয় যে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। একজন সুস্থ মানুষের জন্য মাঝে মাঝে, পরিমিত পরিমাণে এই ধরনের খাবার খেলে তেমন কোনো সমস্যা নেই।
গুরুত্বপূর্ণ হলো, খাবারের তালিকায় অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার যোগ করা এবং একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের বদলে বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়া যেতে পারে। যেমন, আলু সেদ্ধ করে বা ওভেনে বেক করে অল্প তেলে রান্না করা যেতে পারে।
সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল বা অন্যান্য শস্য জাতীয় খাবার খাওয়া ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস খুবই জরুরি। খাবারের তালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবজি, ফল, এবং শস্য রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করাও প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য খাবারের বিষয়ে সচেতন হওয়াটা খুব জরুরি।
সুতরাং, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা এই ধরনের ভাজা খাবার খাওয়ার পরিমাণ সীমিত রাখা এবং একটি সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন