কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। উন্নত বিশ্বে এর প্রয়োগ বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা।
সম্প্রতি, প্রযুক্তি বিষয়ক একটি সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘সিসকো’র প্রেসিডেন্ট জিতু প্যাটেল এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁর মতে, এআইয়ের কারণে কর্মীদের চাকরি চলে যাওয়ার ধারণাটি সঠিক নয়।
প্যাটেলের মতে, কোনো কোম্পানি যদি একেবারে নতুন কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়, তবে সেটি দীর্ঘমেয়াদে তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। কারণ, নতুন কর্মীরা সব সময় নতুন ধারণা নিয়ে আসে।
তাদের চিন্তা-ভাবনা প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পুরনো কর্মীরা অনেক সময় পুরনো ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে ধরে থাকেন, যা পরিবর্তনের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
তাই তরুণ কর্মীদের অভিজ্ঞতা এবং পুরনো কর্মীদের অভিজ্ঞতার মিশেলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
তবে, অনেকেই মনে করছেন, এআই প্রযুক্তি আসার ফলে কিছু ক্ষেত্রে নতুনদের চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, যাদের কাজগুলো পুনরাবৃত্তিমূলক, তাদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা বেশি।
যেমন, ডেটা এন্ট্রি বা তথ্য পূরণ করার মতো কাজগুলো হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এআইয়ের মাধ্যমে করা হবে। যদিও, কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এআই প্রযুক্তি আসার ফলে নতুন কিছু কাজের সুযোগও তৈরি হবে।
যেমন, এআই প্রযুক্তিকে পরিচালনা করা, সফটওয়্যার তৈরি করা ইত্যাদি। গ্রাহক পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও মানুষের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে না। কারণ, এআইয়ের মাধ্যমে গ্রাহক পরিষেবা দেওয়ার জন্য এখনো মানুষের তত্ত্বাবধান প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা বলছে, নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য চাকরির বাজার আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও, এর পেছনে এআই প্রযুক্তি ছাড়াও আরও কিছু কারণ রয়েছে।
তবে, তথ্য-প্রযুক্তি এবং গণিত-এর মতো কয়েকটি বিভাগে নতুন গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি কমেছে, যা এআই প্রযুক্তির কারণে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এআই প্রযুক্তি কর্মসংস্থানকে কিভাবে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকবে। তবে, প্রযুক্তিবিদ এবং নীতিনির্ধারকদের এখন থেকেই এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো বিবেচনা করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
কর্মীদের নতুন করে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা জরুরি। একইসঙ্গে, প্রযুক্তিখাতকে এ বিষয়ে আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন