ভয়ংকর! মূল্যবৃদ্ধির আসল কারণ ফাঁস, বাড়ছে কি তবে বিপদ?

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি: উদ্বেগের কারণ এবং বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব।

সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে। যদিও সাধারণ মানুষের উপর এর প্রভাব এখনো ততটা তীব্র নয়, কিন্তু প্রস্তুতকারকদের জন্য এটি বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জুলাই মাসে প্রস্তুতকারক মূল্য সূচক (Producer Price Index – PPI) এক বছরে ৩.৩ শতাংশ বেড়েছে, যা জুন ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ। সেই সময়ে, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটেছিল, যার ফলস্বরূপ মূল্যস্ফীতি ১১.৩ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আরোপিত শুল্কনীতি। এই শুল্কের কারণে, অনেক ব্যবসার উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।

শুরুতে, ব্যবসায়ীরা এই বাড়তি খরচ নিজেদের মধ্যে রেখেছিলেন, কারণ তাঁরা আশা করেছিলেন যে ট্রাম্প হয়তো তাঁর শুল্কনীতি শিথিল করবেন। কিন্তু এখন, তাঁরা ধীরে ধীরে এই খরচ ভোক্তাদের উপর চাপাতে শুরু করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের আসল প্রভাব হলো, এর খরচ শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের বহন করতে হয়। যদিও ট্রাম্প সবসময় বলতেন যে, শুল্কের বোঝা বিদেশি সরকারগুলো বহন করবে, বাস্তবে আমেরিকান ব্যবসায়ীরাই এর শিকার হচ্ছেন।

এরপর, ভোক্তাদের ওপর এর প্রভাব পড়ছে, যা তাঁদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াচ্ছে।

বর্তমানে, খাদ্য ও আবাসনের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, যা সরাসরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যেমন, আবাসনের উচ্চমূল্যের কারণ হলো চাহিদার তুলনায় বাড়ির সরবরাহ কম থাকা।

তবে, সামনের মাসগুলোতে শুল্কের কারণে সৃষ্ট মূল্যবৃদ্ধি এই সমস্যাগুলোকে আরও জটিল করে তুলবে।

এই পরিস্থিতিতে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি রিপাবলিকানদের জন্য একটি রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ, ট্রাম্পের নেওয়া বিভিন্ন নীতির কারণে আমেরিকানদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

একটি জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের কাজকর্মে মাত্র ৩৮ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট, যেখানে ৬০ শতাংশ মানুষ তাঁর নীতির বিরোধিতা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই মূল্যস্ফীতির প্রবণতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা। এর কারণ হলো, বিশ্বায়নের যুগে যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অন্য দেশগুলোকে প্রভাবিত করে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়লে তা স্থানীয় বাজারেও প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ে, তাহলে বাংলাদেশেও এর দাম বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর চাপ সৃষ্টি করবে।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির এই পরিস্থিতি শুধু তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশকে অবশ্যই এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং নিজেদের অর্থনীতির সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *