ওকলাহোমা রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন এবং বিতর্কিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে আসা শিক্ষকদের জন্য একটি বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা মূলত “উইক” (সামাজিক ন্যায়বিচার এবং প্রগতিশীল ধারণার সমর্থক) শিক্ষকদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
ওকলাহোমার শিক্ষা বিভাগের প্রধান রায়ান ওয়াল্টারস সিএনএনকে জানিয়েছেন, এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে শিক্ষকদের রাজ্যে শিক্ষকতার অনুমতি দেওয়া হবে না।
ওয়াল্টারসের মতে, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল ওকলাহোমার শিশুদের “বামপন্থী” প্রভাব থেকে বাঁচানো। তিনি মনে করেন, ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কের মতো রাজ্যগুলি তাদের শিক্ষকদের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে এমন কিছু ধারণা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে, যা ওকলাহোমার মূল্যবোধের পরিপন্থী।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষকদের “আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্ব” সম্পর্কে ধারণা এবং ছেলে ও মেয়েদের মধ্যেকার মৌলিক জৈবিক পার্থক্য সম্পর্কে জ্ঞান যাচাই করা হবে।
এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতকারক সংস্থা হলো প্রাগারইউ (PragerU)। এটি একটি রক্ষণশীল মিডিয়া সংস্থা, যারা তাদের শিক্ষামূলক উপকরণ তৈরি করে থাকে। যদিও এই সংস্থার তৈরি করা পাঠ্যক্রমগুলি ১০টি রাজ্যে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে, তবে এটি কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়।
এর বিরুদ্ধে প্রায়ই ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে।
ওকলাহোমার এই পদক্ষেপ শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এটি শিক্ষকদের প্রতি “আনুগত্যের পরীক্ষা” এবং এর মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
ওকলাহোমা ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান জন ওয়ালড্রন এই পরীক্ষাটিকে “পেশার প্রতি অপমান” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকরা তো আমেরিকার প্রতি ঘৃণা নিয়ে স্কুলে আসেন না।”
প্রাগারইউ-এর তৈরি করা এই পরীক্ষায় প্রায় ৫০টি প্রশ্ন রয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন হলো লিঙ্গ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোম যুগল চিহ্নিত করা।
এছাড়া, ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুত্ব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম তিনটি শব্দ কী, সে সম্পর্কেও প্রশ্ন রয়েছে।
বর্তমানে, ক্যালিফোর্নিয়া এবং নিউইয়র্ক থেকে আসা শিক্ষকদের এই পরীক্ষা দিতে হবে। তবে ভবিষ্যতে আরও আটটি রাজ্য থেকে আসা শিক্ষকদের জন্য এই নিয়ম চালু হতে পারে।
শিক্ষাবিদদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে শিক্ষক নিয়োগে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং পাঠ্যক্রমের স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে।
ওকলাহোমার এই পদক্ষেপ এখন শিক্ষক মহলে এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন