যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে (Washington D.C.) সম্প্রতি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, অনেকে বলছেন সেখানকার পরিস্থিতি ১৯৬৮ সালের সহিংসতার তুলনায় অনেক ভিন্ন।
১৯৬৮ সালে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের (Martin Luther King Jr.) হত্যাকাণ্ডের পর ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্যাপক দাঙ্গা হয়, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সামরিক বাহিনীর সাহায্য নিতে হয়েছিল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা মনে করছেন, এখনকার পরিস্থিতি সামরিক বাহিনী মোতায়েনের মতো গুরুতর নয়। তারা বলছেন, শহরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো।
সহিংস অপরাধের হারও কমেছে।
১৯৬৮ সালের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে অনেকে বলেন, তখন পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। শহরের রাস্তায় আগুন জ্বলছিল, ধ্বংসযজ্ঞ চলছিল, এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ভীতি ছিল।
এমনকি তখন সেনাদেরও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল। সেসময়কার পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন (Lyndon B. Johnson) বাধ্য হয়ে বিদ্রোহ দমন আইনে সেনা নামিয়েছিলেন।
ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, ১৯৬৮ সালের দাঙ্গার সময় ১৩ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ ছিল। এই দাঙ্গায় ৬ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং ১৩ জন নিহত হন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান করছেন এবং পর্যটকদের সাথে ছবি তুলছেন। স্থানীয় অনেক বাসিন্দার মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি তাঁদের কাছে খুব একটা জরুরি বলে মনে হচ্ছে না।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও চলছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শহরের পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হচ্ছে।
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে অন্য একটি রাজ্যেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যেখানে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কোনো অনুরোধ ছিল না। বর্তমানে, ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ওয়াশিংটন ডিসির কর্মকর্তারা বলছেন, শহরের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। তাঁদের মতে, শহরের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৬৮ সালের মতো নয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন