খেলাধুলার জগতে, বিশেষ করে যেখানে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, সেখানে টিকে থাকতে হলে নতুন উপার্জনের পথ খুঁজে বের করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে ক্রীড়া সংস্থাগুলো এখন খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ, সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ মেটাতে বিভিন্ন ধরনের উপায় খুঁজছে।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একটি পদক্ষেপ বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Oklahoma) তাদের ক্রীড়া বিভাগকে লাভজনক করতে অভিনব এক উপায় বের করেছে। ‘সুনার ম্যাজিক মেমোরিজ’ নামের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে, এই বিশ্ববিদ্যালয় খেলা প্রেমীদের জন্য প্রেস কনফারেন্সে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করেছে। যেখানে খেলা শেষে কোচ এবং খেলোয়াড়দের সরাসরি প্রতিক্রিয়া শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে, এই অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কিছু অর্থ খরচ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৬ই সেপ্টেম্বর ওকলাহোমা-মিশিগান খেলার পর প্রেস কনফারেন্সে দু’জনের অংশগ্রহণের খরচ ধরা হয়েছে ৬৯২ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০,০০০ টাকার সমান (বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণে এই অংকটি কম-বেশি হতে পারে)।
এছাড়া, ২০শে সেপ্টেম্বর অবার্নের বিরুদ্ধে খেলা দেখার পরে একই সুযোগের জন্য খরচ হবে ৫৭৬ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৭,০০০ টাকার মতো।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, খেলা উপভোগ করার পাশাপাশি, এই ধরনের বিশেষ অভিজ্ঞতা দর্শকদের আরও কাছাকাছি আনবে। খেলোয়াড় এবং কোচের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানার সুযোগ করে দেওয়া হবে, যা খেলাপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়।
এই পদক্ষেপের পেছনে মূল কারণ হল খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা এবং খেলাধুলা বিভাগের অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি। বিশেষ করে, ‘নেইম, ইমেজ এবং লাইকনেস’ (NIL) চুক্তির কারণে খেলোয়াড়রা এখন তাদের ছবি এবং নামের ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে।
এর ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের খেলোয়াড়দের সাথে রাজস্ব ভাগাভাগি করতে হচ্ছে। সম্প্রতি, ‘হাউস সেটেলমেন্ট’-এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের খেলোয়াড়দের সাথে সরাসরি প্রায় ২০.৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রাজস্ব ভাগাভাগি করতে পারবে।
ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ ক্রীড়া জগতে অর্থ উপার্জনের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ভবিষ্যতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের ক্রীড়া কার্যক্রমের জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য এমন অভিনব উপায় খুঁজে বের করতে পারে।
খেলাধুলার এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে হলে, উদ্ভাবনী উপায়ে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
তথ্য সূত্র: CNN