যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা: উষ্ণতা প্রসারের এক বিচিত্র চিত্র
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা নিয়ে এক নতুন গবেষণা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দেশটির কিছু অঞ্চলে, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে, গ্রীষ্মের তাপমাত্রা সেভাবে বাড়েনি, যা পশ্চিমা অঞ্চলের তুলনায় বেশ ভিন্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এমন তাপমাত্রার এই ভিন্নতা একটি কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়।
গবেষকরা এই অঞ্চলের তাপমাত্রার এই ‘গর্ত’ বা ‘হোল’ তৈরির কারণ অনুসন্ধানে নেমেছেন। তাঁদের মতে, এর পেছনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো বনায়ন, যা তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, ভুট্টা চাষের কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াও একটি কারণ।
বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দিনের বেলা তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অঞ্চলের আচরণও এই পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত পৃথিবীর স্থলভাগ সমুদ্রের চেয়ে দ্রুত উষ্ণ হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, এই প্রবণতা ভিন্ন। দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কম। উদাহরণস্বরূপ, আলাবামা, জর্জিয়া, কেনটাকি এবং টেনেসির মতো রাজ্যে ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে তাপমাত্রা বেশ কম ছিল।
এরপর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও, তা আগের দশকের তুলনায় খুব বেশি বাড়েনি।
বিজ্ঞানীরা এখনো এই ‘হোল’-এর সঠিক কারণগুলো জানার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে দিনের বেলা তাপমাত্রা তেমন বাড়ছে না। আবার কারো মতে, বনায়ন এবং কৃষিকাজের পরিবর্তনও এর জন্য দায়ী।
তবে, তাঁরা এ ব্যাপারে একমত যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রীষ্মের এই উষ্ণতা বৃদ্ধি একটি জটিল বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিশেষ উদাহরণ। যদিও দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার কম, এর মানে এই নয় যে সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নেই। গ্রীষ্মকালে গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হয়, যা মানুষের জীবনযাত্রায় সরাসরি প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই ‘হোল’-এর কারণে হয়তো সেখানকার মানুষজন উষ্ণতা অনুভব করছেন না, তবে এর মানে এই নয় যে, সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নেই। বৃষ্টি কমে গেলে বা অন্য কোনো কারণে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে, যা ভবিষ্যতে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সারা বিশ্বেই বাড়ছে, এবং এর কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। এই গবেষণা আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের জটিলতা বুঝতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন