আকাশ থেকে আলট্রা ম্যারাথনের পথে: কঠিন পরিস্থিতি থেকে উঠে আসা জিম ওয়ালমসলির গল্প। জিম ওয়ালমসলির নামটা এখন বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
তিনি একজন সফল আলট্রা রানার, যিনি দৌড়বিদ্যায় এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছেন। তবে এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক কঠিন অতীত। সামরিক বাহিনী থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এক গভীর হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিলেন তিনি। সেই অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফেরার গল্পই আজ আমরা জানবো।
বিমান বাহিনী থেকে বিতাড়ন এবং মানসিক বিপর্যয়।
মার্কিন বিমান বাহিনীতে কাজ করার সময়, ওয়ালমসলির জীবনে নেমে আসে এক গভীর সংকট। একটি পরীক্ষায় অসততা এবং মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে তাকে বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এর ফলস্বরূপ, তিনি মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হন এবং আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা করতে শুরু করেন। সেই সময়টা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়।
দৌড়: হতাশা থেকে মুক্তির পথ।
এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে, ওয়ালমসলির জীবনে দৌড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি পুনরায় দৌড় শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে এই অভ্যাসের প্রতি আকৃষ্ট হন। দৌড় তার জীবনে নতুন আশা জাগিয়ে তোলে এবং হতাশা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। তিনি নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে শুরু করেন।
আলট্রা দৌড়বিদ্যায় উত্থান।
ওয়ালমসলির দৌড়ের প্রতি ভালোবাসা তাকে আলট্রা দৌড়বিদ্যায় নিয়ে আসে। এই ধরনের দৌড়ে, ম্যারাথনের চেয়ে অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। কঠোর পরিবেশে দীর্ঘ সময় ধরে দৌড়ানো শারীরিক ও মানসিক ধৈর্যের এক চরম পরীক্ষা। ওয়ালমসলি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং একের পর এক সাফল্য অর্জন করতে শুরু করেন।
সাফল্যের মুকুট: ওয়েস্টার্ন স্টেটস এবং ইউটিএমবি জয়।
ওয়ালমসলির সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন স্টেটস আলট্রা ম্যারাথন-এর মতো বিখ্যাত দৌড়। তিনি এই প্রতিযোগিতায় চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এছাড়াও, তিনি আলট্রা-ট্রেইল ডু মন্ট-ব্ল্যাঙ্ক (ইউটিএমবি) জয় করেছেন, যা ট্রেইল দৌড়বিদ্যায় সবচেয়ে বড় পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি এই খেতাব জেতা প্রথম আমেরিকান পুরুষ।
বর্তমানে : আঘাত এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
বর্তমানে, ওয়ালমসলির হাঁটুতে আঘাত লেগেছে, যার কারণে তিনি কিছু সময়ের জন্য দৌড় থেকে দূরে আছেন। তবে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে এবং আবার প্রতিযোগিতায় ফিরতে চান। তার লক্ষ্য হলো আগামী বছরগুলোতে আরও বড় সাফল্য অর্জন করা।
ওয়ালমসলির জীবন আমাদের শিক্ষা দেয় যে, কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে, কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।