বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর খরচ বাড়ছে? আসল কারণ ফাঁস!

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণে বাড়ছে শিক্ষা উপকরণের দাম, উদ্বেগে অভিভাবকেরা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতি কীভাবে বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের প্রভাবিত করে, তার একটি বড় উদাহরণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা উপকরণ এবং পোশাকের দাম বৃদ্ধি।

সম্প্রতি, বিদ্যানন্দনের মৌসুম শুরুর প্রাক্কালে, সেখানকার অভিভাবকদের মধ্যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে উদ্বেগের ছাপ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে অভিভাবকদের রীতিমতো ‘স্টিকার শক’ লাগছে। অর্থাৎ, তারা জিনিসপত্রের দাম দেখে হতবাক হচ্ছেন।

অনলাইন ব্যবসা-সংক্রান্ত একটি প্ল্যাটফর্ম, ক্‍লাভিয়ো’র তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে পোশাক ও আনুষঙ্গিক জিনিসের দাম এক বছরে ৯ শতাংশ বেড়েছে। জুতো, ব্যাগ এবং বেল্টের মতো জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

বিষয়টি নিয়ে ক্‍লাভিয়োর প্রধান বিশ্লেষক জেইক কোহেন জানান, এই মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ হলো বাণিজ্য যুদ্ধ এবং শুল্ক বৃদ্ধি। মূলত, আগের মার্কিন প্রশাসনের শুল্কনীতি—যা আমদানি করা পণ্যের ওপর ট্যাক্স বাড়ায়—এর ফলস্বরূপ দাম বেড়েছে।

ব্র্যান্ডগুলো তাদের মুনাফা ধরে রাখতে দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক পোশাক ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তৈরি হয়, তাই এই শুল্ক নীতির সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাদের ওপর।

হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক আলবার্তো কাভালো-র মতে, শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়াটা অপ্রত্যাশিত নয়। তাঁর গবেষণায় দেখা গেছে, শুল্ক আরোপের ফলে আমদানি করা পণ্যের দাম প্রায় ৫ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ পণ্যের দাম ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক মার্কিন পরিবার তাদের কেনাকাটার ধরনে পরিবর্তন আনছে। একটি জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ শতাংশ অভিভাবক জিনিসপত্রের উচ্চ দামের কারণে কেনাকাটার ধরন পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

কেউ কেউ পুরনো পোশাক ব্যবহার করছেন, আবার কেউ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী জিনিস কিনছেন।

এই পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচকরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে একদিকে যেমন পণ্যের দাম বাড়ছে, তেমনই অনেক মানুষের জীবনযাত্রার খরচও বাড়ছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার দাবি করছে যে, তাদের নীতিমালার কারণে মজুরি বেড়েছে এবং মূল্যস্ফীতি কমেছে, তবে অনেক সাধারণ মানুষ এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন। তাঁদের মতে, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে, যা তাঁদের জন্য উদ্বেগের কারণ।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই ধরনের নীতি-নির্ধারণের ফলে বিভিন্ন দেশের ভোক্তারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে।

একইভাবে, বাংলাদেশের বাজারেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতি এবং শুল্কের কারণে বিভিন্ন পণ্যের দামে পরিবর্তন আসে, যা সরাসরি আমাদের ভোক্তাদের প্রভাবিত করে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *