যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে ডেমোক্র্যাটরা তাদের নির্বাচনী এলাকার মানচিত্র নতুন করে তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যেখানে টেক্সাসে রিপাবলিকানরা এরই মধ্যে তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এই পদক্ষেপগুলো আগামী নির্বাচনগুলোতে দলগুলোর ক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটরা মূলত টেক্সাসের রিপাবলিকানদের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই পরিকল্পনা করছেন। তাদের অভিযোগ, টেক্সাসে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণে কারচুপি করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটদের লক্ষ্য হলো, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজ্যের কংগ্রেসনাল আসনগুলোতে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করা।
এর জন্য তারা একটি বিশেষ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারেন, যেখানে ভোটাররা বিদ্যমান কংগ্রেসনাল মানচিত্র পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের মতামত জানাবেন। ডেমোক্র্যাটদের মতে, এই পরিবর্তনের ফলে তারা অন্তত পাঁচটি আসন বাড়াতে সক্ষম হবেন।
অন্যদিকে, টেক্সাসে রিপাবলিকানরা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন কংগ্রেসনাল মানচিত্র অনুমোদন করেছে। রাজ্যের আইনসভায় ভোটাভুটির পর এটি এখন গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। টেক্সাসের রিপাবলিকানরাও মনে করছেন, এই পদক্ষেপের ফলে তারা আরও পাঁচটি আসন নিজেদের দখলে নিতে পারবে। ডেমোক্র্যাটরা অবশ্য এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।
এই ঘটনার মূল কারণ হলো, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সুবিধামতো এলাকার সীমানা তৈরি করে, যা তাদের দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। এই ধরনের কার্যক্রমকে অনেক সময় ‘গেরিম্যান্ডারিং’ বলা হয়, যেখানে একটি দলের সুবিধা নিশ্চিত করতে নির্বাচনী এলাকার সীমানা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করা হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসামের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, “রাজনৈতিক কারচুপির বিরোধিতা করলেও, ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছেন।” ডেমোক্র্যাটদের মতে, এই পদক্ষেপ তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা সকল ভোটারের কাছে তাদের অবস্থান তুলে ধরবে।
তবে, এই পরিবর্তনের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়ার প্রস্তাবিত বিশেষ নির্বাচনের সম্ভাব্য খরচ কয়েকশ’ মিলিয়ন ডলার হতে পারে। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, টেক্সাসের পরিকল্পনার মোকাবিলায় এই খরচ করা জরুরি।
নির্বাচনী এলাকার সীমানা পরিবর্তনের এই লড়াই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগামী দিনগুলোতে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করবে বলেই মনে হচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে আগামী নির্বাচনগুলোতে ভোটারদের প্রতিনিধিত্বের ধরনেও পরিবর্তন আসতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন