ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটের লড়াই: ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নয়া রাজনৈতিক যুদ্ধ?

ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচনী মানচিত্র পুনর্গঠন নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক লড়াই, প্রভাব ফেলবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের আসন বিন্যাস নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ডেমোক্র্যাট দল চাইছে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নতুন করে সাজাতে, তাদের যুক্তি এর মাধ্যমে রিপাবলিকানদের প্রভাব কমানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে, রিপাবলিকান পার্টি এবং সুশীল সমাজের একাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে। তাঁদের মতে, এর ফলে একটি স্বাধীন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হবে।

আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটারদের এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মূলত, এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ‘প্রপোজিশন ৫০’ নামে পরিচিত একটি প্রস্তাব। এর মাধ্যমে নির্ধারিত হবে রাজ্যের কংগ্রেসনাল জেলার সীমানা কেমন হবে। এই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমীকরণ।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম এই বিতর্কে ডেমোক্রেটদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর মূল লক্ষ্য হলো, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবকে প্রতিহত করা। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের পক্ষ থেকে প্রাক্তন স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি এবং অন্যান্য নেতারা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। তাঁরা মনে করেন, এর মাধ্যমে ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতার অপব্যবহার করবে। এমনকি এই বিতর্কে প্রাক্তন গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারও জড়িত হয়েছেন, যিনি মূলত একটি স্বাধীন কমিশনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর প্রভাব পড়তে পারে সারা দেশের রাজনীতিতে। কারণ, এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে প্রতিনিধি পরিষদে দলগুলোর আসন সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে, যা বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিতর্কের মূল কারণ হলো আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, সেই লড়াই। ক্যালিফোর্নিয়ার এই নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ইতোমধ্যেই কয়েক মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

গভর্নর নিউসাম মনে করেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর একটি বড় আঘাত হানা সম্ভব হবে। ডেমোক্র্যাটরা ভোটারদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে যে, ট্রাম্পের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার এটাই উপযুক্ত সময়। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা নিউসামকে ডেমোক্রেটদের ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচনের ফল উভয় দলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন ডেমোক্র্যাটরা তাদের ক্ষমতা আরও সুসংহত করতে পারবে, তেমনি রিপাবলিকানদের কাছেও নিজেদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *