চীনে উদ্বেগের ছায়া! দূতাবাস নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত

যুক্তরাজ্যে চীনের দূতাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির সরকার বেইজিংকে লন্ডনে বিশাল দূতাবাস বানানোর অনুমতি দেবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে। মূল কারণ, চীনের পক্ষ থেকে দূতাবাসের নকশার কিছু অংশের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। প্রথমে সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল, তবে এখন তা পিছিয়ে আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে।

লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি পুরনো ভবনের স্থানে এই দূতাবাস বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা নিয়ে গত তিন বছর ধরেই স্থানীয় বাসিন্দা, ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা এবং হংকংপন্থী গণতন্ত্রপন্থীদের মধ্যে তীব্র আপত্তি দেখা যাচ্ছে। তাদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হলো, এই দূতাবাস গুপ্তচরবৃত্তির ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকেই তারা এর বিরোধিতা করছেন।

ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া নকশায় কিছু অংশ কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে, যে কারণে চীনকে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছিল। তবে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ভেতরের বিস্তারিত নকশা দেখাতে রাজি নয়। তাদের মতে, যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা দূতাবাসের মূল কাঠামো বোঝানোর জন্য যথেষ্ট।

তবে, চীনের এই যুক্তিতে অনেকে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। বিশেষ করে, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন একটি আন্তর্জাতিক সংসদীয় জোটের নির্বাহী পরিচালক লুক ডি পুলফোর্ড বিষয়টিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। তার মতে, চীনের এই ‘আশ্বাস’ অনেকটা ‘আমাকে বিশ্বাস করুন’ ধরনের।

অন্যদিকে, লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এই ঘটনার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে স্বাগতিক দেশগুলোর সহযোগিতা করা আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার অংশ। যুক্তরাজ্যকে দ্রুত পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য তারা আহ্বান জানিয়েছে।

এর আগে, দূতাবাস নির্মাণে সম্ভাব্য ‘গোপন সুবিধা’ ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার যে অভিযোগ উঠেছিল, তাকে ‘ baseহীন অপবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। জানা গেছে, ২০১৮ সালে চীন সরকার রয়্যাল মিন্ট কোর্ট নামের ওই জায়গাটি কিনেছিল। ২০২২ সালে স্থানীয় কাউন্সিল দূতাবাস নির্মাণের অনুমতি দিতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এরপর, স্টারমারের সরকার পরিকল্পনা বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব নেয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *