শীঘ্রই প্রকাশিত হতে চলেছে ভার্জিনিয়া গিউফ্রের আত্মজীবনী, যেখানে তিনি জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এই বইটি প্রকাশের কয়েক মাস আগেই আত্মহত্যা করেন গিউফ্রে।
“নোবডি’স গার্ল: আ মেমোর অফ সার্ভাইভিং অ্যাবিউজ অ্যান্ড ফাইটিং ফর জাস্টিস” (Nobody’s Girl: A Memoir of Surviving Abuse and Fighting for Justice) শিরোনামের বইটি আগামী ২১ অক্টোবর বাজারে আসার কথা রয়েছে।
প্রকাশনা সংস্থা আলফ্রেড এ. নপফ (Alfred A. Knopf) রবিবার এই খবর নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, ৪১ বছর বয়সী গিউফ্রে, যিনি গত এপ্রিল মাসে আত্মহত্যা করেন, লেখক ও সাংবাদিক অ্যামি ওয়ালেসের (Amy Wallace) সঙ্গে বইটি লিখছিলেন এবং পান্ডুলিপি তৈরি সম্পন্ন করে গিয়েছিলেন।
প্রকাশকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে গিউফ্রে ওয়ালেসকে একটি ইমেইল করেছিলেন, যেখানে তিনি লিখেছিলেন, তার একান্ত ইচ্ছা ছিল, তার জীবনের এই অভিজ্ঞতার কথাগুলো যেন সবার কাছে পৌঁছে যায়।
ইমেইলে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বইটির বিষয়বস্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সীমান্ত পেরিয়ে দুর্বল ব্যক্তিদের পাচার করার মতো ঘটনার পেছনে থাকা পদ্ধতিগত ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরে। ন্যায়বিচার এবং সচেতনতা—উভয়ের স্বার্থেই এই বিষয়ে সত্যটা জানা এবং এর সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো বোঝা অপরিহার্য।”
২০১৯ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের একটি কারাগারে জেফরি এপস্টাইনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তকারীদের মতে, এটি আত্মহত্যা ছিল।
গিউফ্রের অভিযোগ ছিল, এপস্টাইনের যৌন পাচার চক্রে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং ব্রিটেনের প্রিন্স অ্যান্ড্রুসহ আরও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এতে জড়িত ছিলেন।
প্রকাশক সূত্রে জানা যায়, বইটি লেখার সময় গিউফ্রে তার ব্যক্তিগত জীবনের অনেক গোপন এবং মর্মস্পর্শী ঘটনা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে এপস্টাইন, ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এবং তাদের পরিচিত অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির কথা রয়েছে।
এই প্রথম তিনি প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন।
গিউফ্রের মৃত্যুর পরেও তার নাম বিভিন্ন সময়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছে।
জানা যায়, একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছিলেন, এপস্টাইন গিউফ্রেকে তার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো ক্লাব থেকে ‘চুরি’ করেছিলেন।
গিউফ্রে অভিযোগ করেছিলেন, ম্যাক্সওয়েল তাকে এপস্টাইনের হয়ে কাজ করতে প্রলুব্ধ করেছিলেন।
প্রকাশক জানিয়েছেন, বইটিতে ২০১৯ সালের আগের অপ্রকাশিত একটি আত্মজীবনীর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যার নাম ছিল ‘দ্য বিলিওনেয়ার্স প্লেবয় ক্লাব’।
গিউফ্রের এই আত্মজীবনী তৈরি হয়েছে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এবং এতে আইনি দিকগুলোও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
অ্যামি ওয়ালেস একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, যিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের মতো নামকরা সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস