চীনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি হ্যাকিং গ্রুপের বিরুদ্ধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কূটনীতিকদের ওপর সাইবার হামলার অভিযোগ এনেছে গুগল। মঙ্গলবার এক ব্লগ পোস্টে গুগল থ্রেট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এই তথ্য প্রকাশ করে।
তাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মার্চ মাসে হ্যাকিং গ্রুপটি ওয়েব ট্র্যাফিক হাইজ্যাক করে, ক্ষতিকারক সফটওয়্যার ডাউনলোড করে এবং পরবর্তীতে একটি ব্যাকডোর তৈরি করে।
গুগল জানিয়েছে, হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া সকল ব্যবহারকারীকে তারা সতর্ক করেছে। তবে, ঠিক কোন কোন দেশের কূটনীতিকরা এই আক্রমণের শিকার হয়েছেন, তা তারা জানায়নি।
বিস্তারিত জানতে সিএনএন গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও, গুগল এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য জানায়নি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র গুগলের এই দাবির বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি গুগলের বিরুদ্ধে ‘চীনা হ্যাকারদের আক্রমণ’ বিষয়ক মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দীর্ঘদিন ধরেই চীনের সাইবার সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, চীন সরকারের মদদে হওয়া হ্যাকিং প্রোগ্রাম অন্যান্য দেশের সম্মিলিত হ্যাকিং প্রোগ্রামের চেয়েও অনেক বড়।
সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হ্যাকিংয়ের ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চীনকে দায়ী করেছে।
গুগলের এই ঘোষণার আগে, মাইক্রোসফটও চীনা হ্যাকারদের দ্বারা তাদের সার্ভারে হওয়া আক্রমণের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করে। গত মাসে, মাইক্রোসফট তাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, শেয়ারপয়েন্টের দুর্বলতা খুঁজে পায়, যা চীনা হ্যাকাররা ব্যবহার করেছিল।
এই ঘটনার পরে, যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো নিরাপত্তা সংস্থা (CISA) একটি সতর্কবার্তা জারি করে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সংস্থাগুলোকে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়।
গুগলের মতে, এই সাইবার হামলার পেছনে ছিল ‘ইউএনসি৬৩৮৪’ নামের একটি হ্যাকিং গ্রুপ, যা চীনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
ধারণা করা হয়, এই গ্রুপটি ‘টেম্প.হ্যাক্স’ বা ‘মুসতাং পান্ডা’ নামে পরিচিত একটি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। গুগল আরও জানিয়েছে, ইউএনসি৬৩৮৪ এবং টেম্প.হ্যাক্স উভয়ই মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সরকারি সংস্থাগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ করে এবং চীনের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
গুগল আরও জানায়, হ্যাকিং গ্রুপটি ‘সোগু.সেক’ নামের একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ও জটিল ব্যাকডোর ব্যবহার করে। এই ব্যাকডোরটি তথ্য চুরির মতো সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির কাজে প্রায়ই ব্যবহার করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার নিরাপত্তা এখন একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশের মতো ডিজিটাল অবকাঠামো সমৃদ্ধ দেশগুলোর জন্য সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
সরকারি এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে তথ্য আদান-প্রদান সুরক্ষিত রাখতে না পারলে, তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন