আতঙ্কের রাত: অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুকধারীর গুলিতে ২ পুলিশ সদস্য নিহত!

অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বন্দুকধারীর হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির খোঁজে বিশাল তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে দেশটির পুলিশ।

ভিক্টোরিয়া রাজ্যের পোরাপুনকাহ শহরে মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে, যেখানে পুলিশের একটি দল সন্দেহভাজন ড্যাজই ফ্রিম্যান (৫৬) নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ সাংবাদিকদের জানান, ফ্রিম্যান একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি এবং বন্য পরিবেশে টিকে থাকার মতো দক্ষতা তার রয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নিহত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন ৫৯ বছর বয়সী গোয়েন্দা এবং অন্যজন ৩৫ বছর বয়সী একজন কনস্টেবল ছিলেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো একজন পুলিশ সদস্য।

পুলিশ প্রধান জানান, ফ্রিম্যান ঠান্ডা মাথায় কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে এবং এরপর পায়ে হেঁটে পালিয়ে যায়। এরপর থেকেই বিশাল পুলিশি বাহিনী তাকে ধরার জন্য জঙ্গলে তল্লাশি চালাচ্ছে।

জানা গেছে ফ্রিম্যান দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতেন। আদালতের নথিতেও এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি নিজেকে ‘সার্বভৌম নাগরিক’ হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং সরকারের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করতেন।

ভিক্টোরিয়ার সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ফ্রিম্যানের পুলিশের সঙ্গে ‘অpleasant encounters’ বা অপ্রীতিকর ঘটনার ইতিহাস রয়েছে। এমনকি তিনি আদালতের কাছে দাখিল করা আবেদনে পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘নাৎসি’ এবং ‘সন্ত্রাসী গুন্ডা’ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন।

পোরাপুনকাহ শহরটি ভিক্টোরিয়ার আলপাইন অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত, যা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত। ঘটনার পর সেখানকার সরকারি ভবন এবং বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় একটি স্কুলের একশ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, পরে তাদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

পুলিশ কমিশনার বুশ বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, সন্দেহভাজনের বন্য পরিবেশে টিকে থাকার দক্ষতার কারণে তাকে খুঁজে বের করাটা পুলিশের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।

অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনা তুলনামূলকভাবে বিরল। ১৯৯৬ সালে তাসমানিয়ার পোর্ট আর্থারে এক বন্দুকধারীর হামলায় ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর দেশটির সরকার আগ্নেয়াস্ত্রের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।

ভুক্তভোগী পুলিশ কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভিক্টোরিয়া পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ওয়েইন গ্যাট।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *