যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত সময়ের কাজের (ওভারটাইম) বেতনের ওপর কর ছাড়ের ঘোষণা, বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় কিছু দিক।
যুক্তরাষ্ট্রে (USA) কর্মীদের জন্য অতিরিক্ত সময়ের কাজের (ওভারটাইম) বেতনের ওপর কর ছাড়ের একটি নতুন আইন আসছে, যা ২০২৫ সাল থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে এই সুবিধাটি সবার জন্য নয়, এবং এটি যতটা সহজ মনে করা হচ্ছে, ততটা হয়তো নয়।
এই আইনটি কিভাবে কাজ করবে এবং এর কিছু প্রাসঙ্গিক দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নতুন এই আইন অনুযায়ী, কর্মীদের অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য পাওয়া বেতনের পুরোটাই করমুক্ত হবে না। বরং, একজন কর্মীর স্বাভাবিক ঘণ্টাপ্রতি বেতনের অতিরিক্ত যে অংশ, সেটিই কেবল করের আওতামুক্ত থাকবে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো কর্মী তার স্বাভাবিক বেতনের চেয়ে ১.৫ গুণ বেশি হারে ওভারটাইম করেন, তবে অতিরিক্ত বেতনের অর্ধেক অংশের ওপর কর দিতে হবে না।
এই আইনের আওতায় কর ছাড় পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যারা অবিবাহিত, তারা বছরে সর্বোচ্চ $150,000 (প্রায় ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা, টাকার মানের পরিবর্তনশীলতার কারণে এই অঙ্কটি কম-বেশি হতে পারে) পর্যন্ত আয় করলে এই সুবিধা পাবেন।
এই আয়সীমা অতিক্রম করলে, কর ছাড়ের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। অন্যদিকে, বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে এই সীমা $300,000 (প্রায় ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা)।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্স পলিসি সেন্টার (Tax Policy Center)-এর হিসাব অনুযায়ী, এই সুবিধাভোগীর সংখ্যা মোট করদাতার মাত্র ৯ শতাংশ। মূলত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির কর্মীরাই এর সুবিধা পাবেন।
কারণ, কম আয়ের লোকেরা সাধারণত এত বেশি কর দেন না, যা এই ছাড়ের সুবিধা নিতে যথেষ্ট হবে। অন্যদিকে, বেশি উপার্জনকারীরা এই সুবিধার আওতায় পড়বেন না।
গড় হিসাব অনুযায়ী, এই আইনের মাধ্যমে করদাতারা প্রায় ১,৪০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা) পর্যন্ত কর ছাড় পেতে পারেন।
এই আইনের ফলে কর্মীদের কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। ওভারটাইম বাবদ পাওয়া বেতনের ওপর কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা (Social Security) এবং স্বাস্থ্য বীমা (Medicare) বাবদ কর দিতে হবে।
এছাড়া, কর্মীদের ওভারটাইম আয়ের পরিমাণ তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে জানতে হবে, কারণ এই তথ্য সাধারণত W2 ট্যাক্স ফর্মে উল্লেখ করা হয় না।
এই আইনটি নিয়ে এখনো কিছু জটিলতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ (Internal Revenue Service বা IRS)-কে বিস্তারিত নিয়ম তৈরি করতে হবে, যা কর্মীদের এবং তাদের নিয়োগকর্তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া, আইনের কার্যকর হওয়ার তারিখ ২০২৫ সাল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা বিভ্রান্তি দেখা যেতে পারে।
এই আইনটি সরাসরি বাংলাদেশের কর্মীদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে, বিভিন্ন দেশের করনীতি এবং কর ব্যবস্থাপনার ধারণা পাওয়া যেতে পারে, যা আমাদের দেশের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, ওভারটাইম বা অতিরিক্ত সময়ের কাজের ওপর করের বিষয়টি বর্তমানে কিভাবে দেখা হয়, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন (CNN)।