গাজায় জিম্মিদের নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ: অনেকের ‘মৃত্যু’ হতে পারে!

গাজায় জিম্মিদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ট্রাম্প, গাজা শহর ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলের নির্দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গাজায় আটক কয়েকজন জিম্মির মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। একই সময়ে, গাজার বৃহত্তম শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েল। খবর অনুযায়ী, ইসরায়েল সেখানে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাতে পারে।

শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, এখনো যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের মধ্যে হয়তো কয়েকজনের সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে।” তিনি আরও জানান, তিনি বিষয়টির সত্যতা জানার চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাস এবং তাদের মিত্রদের হাতে গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে অপহৃত হওয়া ৪৭ জন জিম্মির মধ্যে এখনও ২৭ জন গাজায় রয়েছে। তবে, তাদের মধ্যে কতজন জীবিত আছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ট্রাম্প অবশ্য জিম্মিদের সম্ভাব্য মৃত্যুর বিষয়ে কোনো সূত্রের উল্লেখ করেননি।

এদিকে, গাজা শহরের বাসিন্দাদের দক্ষিণের মানবিক করিডোরে সরে যাওয়ার জন্য বলছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তাদের দাবি, খান ইউনিসের মাওয়াসি এলাকাকে মানবিক অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে উদ্বাস্তুদের জন্য উন্নত পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তবে, হামাস এক বিবৃতিতে গাজা শহরবাসীকে দক্ষিণ দিকে যেতে নিষেধ করেছে এবং এটিকে “মৃত্যুর পথ” হিসেবে অভিহিত করেছে।

সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গাজা শহর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি অন্যত্র সরে গিয়েছেন, যা শহরের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম। সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা বাস্তুচ্যুত হওয়ার চেয়ে বরং নিজেদের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করতে রাজি।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) গাজা থেকে ব্যাপক হারে লোকজনকে সরানোর বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এমনটা হলে গাজা উপত্যকায় একটি বিশাল মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে, কারণ সেখানে খাদ্য, জল, আশ্রয় এবং চিকিৎসার চরম সংকট রয়েছে।

আলোচিত এই ঘটনার মধ্যে, জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। হামাস সম্প্রতি কাতারি ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পাওয়া একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যেখানে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে জীবিত জিম্মিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে, ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত এই প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তাদের প্রধান দাবি হলো, হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে। তিনি জানান, জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের দ্রুত মুক্তি চান।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *