সার্বিয়ায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ফুঁসছে জনতা, চরম চ্যালেঞ্জের মুখে প্রেসিডেন্ট!

সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুচিচের শাসনের বিরুদ্ধে দেশটির সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ ক্রমেই বাড়ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুর্নীতি এবং স্বৈরাচারী শাসনের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে, যা ভুচিচের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।

নভেম্বর মাসের শুরুতে, নোভিসাড শহরে একটি রেলওয়ে স্টেশনের ছাউনি ভেঙে পড়লে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়। এই ঘটনার পর জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

অনেকেই মনে করেন, এই দুর্ঘটনার পেছনে ছিল রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি ও কর্মকর্তাদের গাফিলতি। এর প্রতিবাদে প্রথমে ছাত্ররা রাস্তায় নামে, কিন্তু ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

জীবনযাত্রার উচ্চ মূল্য এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধেও তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা এখন সরকারের কাছে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ভুচিচ বিক্ষোভকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তির মদদের অভিযোগ এনেছেন।

যদিও তিনি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে দ্রুত নির্বাচনের দাবি তিনি মানতে রাজি নন। এরই মধ্যে, বিক্ষোভ দমনের জন্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন, টিয়ার গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

ভুচিচ ১৯৯০ এর দশকে সার্বিয়ান রেডিক্যাল পার্টিতে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি একসময় দেশটির কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন এবং স্লোবোদান মিলোসেভিচের শাসনামলে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে তিনি নিজেকে ইউরোপপন্থী সংস্কারক হিসেবে তুলে ধরলেও, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী শাসনের অভিযোগ রয়েছে।

সার্বিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ভুচিচের শাসনামলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কমেছে এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বেড়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও সার্বিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট। তবে, অনেকে মনে করেন, ভুচিচ সম্ভবত একমাত্র ব্যক্তি যিনি এই অঞ্চলের শান্তি বজায় রাখতে পারেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সার্বিয়ার পরিস্থিতি এখন গভীর উদ্বেগের কারণ। একদিকে যেমন বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি আদায়ে অনড়, তেমনই সরকারও তাদের অবস্থানে অনঢ় রয়েছে।

ফলে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়ার এবং সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তথ্য সূত্র: এপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *