মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী, চার্লি কার্কের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক হওয়া এক ব্যক্তির বিষয়ে নতুন কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসন নামের ওই ব্যক্তিকে উটাহ অঙ্গরাজ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুন, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং বিচার কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রবিনসন বর্তমানে কোনো রকম জামিন ছাড়াই কারাগারে আছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একটি বিশেষ সেলে রাখা হয়েছে এবং কয়েক দিন ধরে তার উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা রবিনসনের ব্যক্তিগত জীবন এবং অনলাইনে তার গতিবিধির উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন। উটাহ’র গভর্নর স্পেন্সার কক্স জানিয়েছেন, রবিনসন তদন্তে সহযোগিতা করছেন না।
তবে, পরিবার, বন্ধু এবং পরিচিতজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, গেমিং এবং “ডার্ক ইন্টারনেট” সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তিনি চরমপন্থায় ঝুঁকেছিলেন। কর্তৃপক্ষের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পেছনে এটি একটি বড় কারণ হতে পারে।
গভর্নর কক্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিনসনের ফ্ল্যাটমেটের সঙ্গে তার একটি সম্পর্ক ছিল। ওই ফ্ল্যাটমেট পুরুষ থেকে নারী-তে রূপান্তরিত হচ্ছিলেন। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেও হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ডিসকর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুড হফম্যান জানিয়েছেন, ঘটনার পরে রবিনসনের ফ্ল্যাটমেট তার এক বন্ধুর সঙ্গে একটি নোটের বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন। গভর্নর কক্সও নিশ্চিত করেছেন যে, একটি নোট পাওয়া গেছে, তবে সেটির বিষয়বস্তু এখনো যাচাই করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের জেরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের আইনপ্রণেতারা রাজনৈতিক নেতাদের উপর সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ডেমোক্রেট সিনেটর মার্ক কেলি, যিনি নিজেও অতীতে সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, “প্রত্যেকেরই উচিত তাদের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া।”
রিপাবলিকান সিনেটর জন কার্টিসও সহিংসতার নিন্দা করে বলেন, “যে কোনো দিক থেকেই আসা চরমপন্থা ভালো নয়, এটা সুস্থও নয়। এর বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত।”
স্পিকার মাইক জনসন এই ঘটনার পর হাউস সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনার জন্য বামপন্থীদের দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বামপন্থীদের কারণেই সমাজে বিভেদ বাড়ছে এবং সহিংসতার সৃষ্টি হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন