ফেডারেল রিজার্ভে ট্রাম্পের অর্থনীতিবিদের নিয়োগ: সিদ্ধান্ত নিলো সিনেট!

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডে (ফেড) ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্টিফেন মিরানকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর, বিশ্ব অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই নিয়োগের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর হোয়াইট হাউসের প্রভাব আরও বাড়বে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সিনেটের ভোটাভোটিতে মিরানের নিয়োগ অনুমোদন ছিল মূলত দলীয় লাইনে বিভক্ত। রিপাবলিকান সিনেটরদের সমর্থনে এটি পাস হলেও ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতার কারণে বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিরোধীদের মূল অভিযোগ ছিল, মিরান ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারবেন কিনা, কারণ তিনি এর আগে হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডেমোক্র্যাট সিনেটর চাক শুমার মিরানকে ট্রাম্পের ‘মুখপাত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যিনি ফেডারেল রিজার্ভে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ফেডারেল রিজার্ভ, যা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে পরিচিত, দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। সুদের হার নির্ধারণ থেকে শুরু করে আর্থিক নীতি প্রণয়ন—সবকিছুতেই এর সিদ্ধান্তগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মিরানের নিয়োগ এমন এক সময়ে হলো, যখন মার্কিন অর্থনীতিতে একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে বেকারত্বের হারও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, মিরানের এই নিয়োগ ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখন দেখার বিষয়। যদিও মিরান শুনানিতে বলেছিলেন, তিনি ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে কাজ করবেন, তবে বিরোধীদের আশঙ্কা তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেন।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ট্রাম্প এর আগে ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে অপসারণ করতে চেয়েছিলেন, তবে তাতে তিনি সফল হননি। আদালতের রায়ে এই অপসারণ প্রক্রিয়া আটকে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের এই অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন বিশ্ব অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং বিনিময় হারের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর বাইরে নয়। ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তগুলো বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *