যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (Federal Reserve) গভর্ণর লিসা কুককে (Lisa Cook) পদ থেকে অপসারণের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে একটি আপিল আদালত। এই সিদ্ধান্তের ফলে, সুদের হার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভোটের আগে লিসা কুক তার পদে বহাল থাকছেন।
আদালতের এই রায় ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা এবং এর ওপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে যখন ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বৈঠকে সুদের হার কমানোর কথা বিবেচনা করছে।
এই পরিস্থিতিতে, লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা অনেকের কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করার শামিল বলে মনে হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ, যা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে পরিচিত, নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেকটা স্বাধীনতা ভোগ করে। ব্যাংকটি দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সুদের হারসহ বিভিন্ন আর্থিক নীতি নির্ধারণ করে থাকে। এই স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয় যাতে রাজনৈতিক চাপ বা প্রভাবের কারণে ভুল সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের (Bangladesh Bank) মতোই, ফেডারেল রিজার্ভও দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, লিসা কুক ফেডারেল রিজার্ভের গভর্ণর হওয়ার আগে মর্টগেজ সংক্রান্ত কিছু নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। যদিও, আদালত এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে অপসারণের আবেদন খারিজ করে দেয়।
আদালতের মতে, কুককে তার বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা তার অধিকারের লঙ্ঘন।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্টিফেন মিরানকে (Stephen Miran) ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডের শূন্য পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে, তার নিয়োগ নিয়েও অনেকে উদ্বেগ্ন কারণ, এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সাধারণত, ফেডারেল রিজার্ভের সাত জন গভর্ণর এবং বারো জন আঞ্চলিক ব্যাংকের প্রধানসহ মোট উনিশ জন এই বোর্ডের সদস্য। তাদের মধ্যে বারো জন সদস্য সুদের হার নির্ধারণের বিষয়ে ভোট দেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বৈঠকে সুদের হার প্রায় ৪.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.১ শতাংশ করতে পারে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হারের পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা দুর্বল হয়ে পড়লে তা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ, রাজনৈতিক চাপে নীতিনির্ধারকরা এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)