চীনের উদ্ভাবনী শক্তিতে নতুন মোড়, জার্মানিকে পেছনে ফেলে শীর্ষ দশে প্রবেশ।
জাতিসংঘের বার্ষিক উদ্ভাবনী দেশের তালিকায় চীন এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। বেইজিং-এর সংস্থাগুলি গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করায় দেশটি প্রথমবারের মতো শীর্ষ দশের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এর ফলে জার্মানি একাদশ স্থানে নেমে গেছে।
সুইজারল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে, যা তারা ২০১১ সাল থেকে ধরে রেখেছে। এরপর রয়েছে সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্র। ১৩৯টি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তৈরি করা এই গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স (জিআইআই)-এ চীন দশম স্থান অধিকার করেছে। এই ইনডেক্স তৈরি করা হয়েছে ৭৮টি সূচকের ভিত্তিতে।
জিআইআই-এর তথ্য অনুযায়ী, চীন খুব দ্রুত বেসরকারি খাতে অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) ব্যয়কারী দেশে পরিণত হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক পেটেন্ট আবেদনের দিক থেকেও চীন এগিয়ে রয়েছে। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক পেটেন্ট আবেদনের প্রায় এক চতুর্থাংশ ছিল চীনের দখলে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও জার্মানির সম্মিলিত আবেদন ছিল মোট আবেদনের ৪০ শতাংশ, সেখানে তাদের আবেদনে সামান্য হ্রাস দেখা গেছে।
একটি দেশের অর্থনৈতিক শক্তি এবং শিল্প জ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে পেটেন্ট মালিকানাকে দেখা হয়। তবে, এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবনের ভবিষ্যৎ কিছুটা অনিশ্চিত। কারণ, সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিনিয়োগের পরিমাণ কমছে। গত বছর আরএন্ডডি-তে ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি হলেও, চলতি বছরে তা কমে ২.৩ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। যা ২০১০ সালের আর্থিক সংকটের পর থেকে সর্বনিম্ন।
বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থার (World Intellectual Property Organization) মহাপরিচালক ড্যারেন টাং-এর মতে, জার্মানির জন্য চ্যালেঞ্জ হলো, শিল্প উদ্ভাবনের শক্তিশালী কেন্দ্র হিসেবে তাদের দীর্ঘদিনের খ্যাতি বজায় রেখে ডিজিটাল উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও নিজেদের শক্তিশালী করা। জিআইআই-এর সহ-সম্পাদক সাশা ভুন্স-ভিনসেন্ট মনে করেন, জার্মানির একাদশ স্থানে নেমে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
যুক্তরাষ্ট্র, চীনের আগে শীর্ষ দশে থাকা অন্যান্য দেশগুলো হলো: দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক।
এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি হতে পারে। চীন উদ্ভাবনে উন্নতি লাভ করায়, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং নতুন বাজার তৈরির সম্ভাবনা বাড়বে। তবে, একই সাথে বিশ্ব বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই বাংলাদেশেরও উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন