যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল আন্দোলনের নেতা চার্লি ক্রিকের হত্যাকাণ্ড: শোক, প্রতিবাদের ঢেউ।
যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল আন্দোলনের পরিচিত মুখ চার্লি ক্রিকের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চলতি মাসের শুরুতে এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন তিনি। তাঁর মৃত্যু এই মুহূর্তে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
তাঁর অনুসারীরা যেমন শোকাহত, তেমনই অনেকে এই হত্যার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছেন।
চার্লি ক্রিকের অনুসারীদের মধ্যে তাঁর আদর্শের প্রতি গভীর একাত্মতা দেখা যাচ্ছে। তাঁরা মনে করেন, ক্রিকের রাজনৈতিক দর্শন এবং খ্রিস্টান ধর্মবিশ্বাসের প্রতি তাঁর অবিচল আনুগত্যের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তাঁরা এই আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক নেতারা এবং ক্রিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন।
আগামী রোববার অ্যারিজোনার গ্লেনডেল-এ স্টেট ফার্ম স্টেডিয়ামে চার্লি ক্রিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেক প্রভাবশালী রক্ষণশীল নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
স্মরণসভায় বক্তৃতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প। বক্তৃতায় তিনি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করবেন এবং ক্রিকের রাজনৈতিক আন্দোলনে তাঁর প্রভাবের কথা তুলে ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর থেকেই ট্রাম্পের সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনিই প্রথম জানান যে, ক্রিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং পরে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। এমনকি, সন্দেহভাজনকে আটকের খবরও তিনিই জানান।
নিহত ক্রিকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ট্রাম্প শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, শোকের এই সময়ে ক্রিকের স্ত্রী এরিকা ক্রিককে ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরিকা ক্রিক তাঁর স্বামীর আদর্শকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন এবং সংগঠনটিকে আরও শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের নারীদের রক্ষণশীল আন্দোলনে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চার্লি ক্রিকের মৃত্যু পরবর্তী সময়ে ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’-তে নতুন সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক যোগ দেওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। এরই মধ্যে, উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজ পড়ুয়া প্রায় ৬২,০০০ শিক্ষার্থী নতুন শাখা খুলতে বা বিদ্যমান গ্রুপগুলোতে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকে ক্রিকের মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং তাঁরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। স্মরণসভার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন