হারিয়ে যাওয়া চিঠি: ৭২ বছর পর, অচেনা মানুষের হাতে বাবার পুরোনো চিঠি!

১৯৫৩ সালের একটি পুরনো চিঠি, যা নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো হয়েছিল, অবশেষে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে আমেরিকার ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের অটোয়া শহরে এসে পৌঁছায়।

চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন ড. অ্যালান বল নামের একজন ব্যক্তি, যিনি সেসময় ছুটিতে পুয়ের্তো রিকো যাওয়ার আগে তার বাবা-মাকে একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এই ঘটনার সাক্ষী হতে এখনো জীবিত রয়েছেন অ্যালান বল, যিনি বর্তমানে আইডিয়াহো অঙ্গরাজ্যের স্যান্ড পয়েন্টে বসবাস করেন।

চিঠিটি সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছায়নি, তবে এর পেছনের গল্পটি বেশ আকর্ষণীয়।

১৯৫৩ সালের ১৭ই জুন তারিখে, জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে পোস্টকার্ডটি পাঠানো হয়। কার্ডটি “রেভ. এফ. ই. বল ও তার পরিবার”-এর উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল।

কিন্তু এত বছর পর যখন চিঠিটি অটোয়ার পোস্ট অফিসে ফেরে, তখন সেই ঠিকানায় আর কেউ বসবাস করতেন না। এরপর শুরু হয় আসল ঘটনা।

অটোয়ার পোস্টমাস্টার মার্ক থম্পসন চিঠিটি আসল গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং চিঠিটির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেন।

স্থানীয় অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং বংশতালিকা বিষয়ক গবেষকদের একটি দল এই কাজে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে।

তারা পুরনো খবরের কাগজ এবং আর্কাইভ ঘেঁটে “রেভ. এফ. ই. বল” এবং “অ্যালান”-এর বিষয়ে তথ্য খুঁজতে থাকেন। অবশেষে, তাঁদের অনুসন্ধান গিয়ে শেষ হয় ড. অ্যালান বলের কাছে।

জানা যায়, ১৯৫৩ সালে তিনি অটোয়া থেকে নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে পুয়ের্তো রিকোতে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে যাওয়ার কথা ছিল।

ড. বল জানান, নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে তিনি জাতিসংঘের সদর দপ্তরে যান এবং সেখান থেকে তার বাবা-মাকে একটি পোস্টকার্ড লেখেন। তিনি ভেবেছিলেন, এই কার্ডের মাধ্যমে তিনি তার পরিবারের কাছে পৌঁছে গেছেন, কিন্তু তিনি হয়তো কখনোই জানতে পারেননি যে তার পাঠানো বার্তাটি এত বছর ধরে হারিয়ে গিয়েছিল।

যখন ড. বল তার পুরনো চিঠিটি ফিরে পান, তখন তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার কাছে খুবই অদ্ভুত লেগেছিল।” স্যান্ড পয়েন্টের পোস্ট অফিসের একজন কর্মচারী হাসি মুখে তাকে কার্ডটি দিয়ে বলেন, “দেরিতে পৌঁছানোর জন্য দুঃখিত।”

এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, একটি পুরনো চিঠিও মানুষের মাঝে আনন্দ এবং স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে।

একজন উৎসুক পোস্টমাস্টার, স্থানীয় সাংবাদিক এবং একদল নিবেদিতপ্রাণ গবেষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৭২ বছর পর হলেও, চিঠিটি তার প্রাপকের কাছে পৌঁছেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *