যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লীগ বেসবলে (এমএলবি) আসছে ‘রোবট আম্পায়ার’। ২০২৬ সাল থেকে খেলাগুলোতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করারও সুযোগ থাকবে।
সম্প্রতি এমএলবি-র ১১ সদস্যের একটি কমিটি এই প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। আসলে, এই নতুন পদ্ধতিতে খেলা পরিচালনা করার মূল উদ্দেশ্য হলো মাঠের আম্পায়ারের ভুলগুলো কমিয়ে আনা।
খেলোয়াড়, ম্যানেজার কিংবা কোচের অসন্তুষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও কমবে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর খেলোয়াড়দের বহিষ্কারের ৬১.৫ শতাংশের কারণ ছিল বল ও স্ট্রাইক বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক, আর চলতি মৌসুমে এই সংখ্যা ৬০.৩ শতাংশ।
নতুন নিয়মানুসারে, প্রতিটি দল প্রতি ম্যাচে দুটি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে, দলগুলো অতিরিক্ত আরও একটি চ্যালেঞ্জের সুযোগ পাবে।
কোনো বোলার, ব্যাটসম্যান অথবা দলের অন্য কোনো সদস্য হেলমেট বা ক্যাপে টোকা দিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা হলে, দল সেই সুযোগটি ধরে রাখতে পারবে।
মাঠের স্কোরবোর্ডে ডিজিটাল গ্রাফিকসের মাধ্যমে রিভিউ দেখানো হবে, যা খেলাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খেলার স্বচ্ছতা বাড়বে, কারণ ‘অটোমেটেড বল/স্ট্রাইক সিস্টেম’ (এবিএস) নামে পরিচিত এই প্রযুক্তি ‘হক-আই ক্যামেরা’ ব্যবহার করে বলের গতিবিধি এবং স্ট্রাইক জোন বিশ্লেষণ করবে।
এর মাধ্যমে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা কমবে, যা খেলোয়াড়দের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
মেজর লিগে এই পরিবর্তনের আগে, ২০১৯ সাল থেকে মাইনর লিগগুলোতে এই প্রযুক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষায় সাফল্যের পর, এমএলবি কর্তৃপক্ষ ২০২৬ সাল থেকে এটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে খেলা পরিচালনায় প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে এবং খেলার মান উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে, এই পরিবর্তনের ফলে কিছু বিতর্কও দেখা দিতে পারে। কারণ, অনেক খেলোয়াড় এবং বিশ্লেষক মনে করেন, মানুষ আম্পায়ারের খেলাটি উপভোগ করার একটি বিশেষত্ব রয়েছে, যা এই প্রযুক্তির কারণে হয়তো কিছুটা কমবে।
এখন দেখার বিষয়, এই নতুন নিয়ম খেলোয়াড় ও দর্শকদের কতটা মন জয় করতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন