ফ্লোরিডার পাম বিচ চিড়িয়াখানায় সোনালী সিংহ-লেজযুক্ত ট্যামারিন (Leontopithecus rosalia) এবং হফম্যানের দ্বি-আঙুলযুক্ত স্লথ (Choloepus hoffmanni)-এর একসঙ্গে বসবাসের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এই দুই বিরল প্রজাতির প্রাণীর জন্য একটি নতুন আবাসস্থল তৈরি করেছে, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এই প্রাণীগুলোর আদি বাসস্থান। নতুন আবাসস্থলটি সেই প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে।
ঘন গাছপালা এবং লতাগুল্মে আচ্ছাদিত এই স্থানটি ট্যামারিনদের অবাধে বিচরণ করতে এবং স্লথদের গাছের ডালে বিশ্রাম নিতে সাহায্য করে।
চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক ডেভিন ক্লার্কের মতে, “ট্যামারিনরা সম্ভবত স্লথকে তাদের আসবাবপত্রের মতোই দেখে, কারণ তারা খুব একটা নড়াচড়া করে না।
দিনের বেলা তারা ঘুমায় এবং রাতে একটু সক্রিয় থাকে। তাই তাদের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করাটা ট্যামারিনদের কাছে ভীতিকর কিছু নয়।”
গত আগস্ট মাসে চালু হওয়া এই আবাসস্থলটি দর্শকদের জন্য প্রাণীগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে।
এর ফলে বন্যপ্রাণী এবং তাদের সংরক্ষণের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ।
চিড়িয়াখানার প্রেসিডেন্ট এবং সিইও মার্গো ম্যাকনাইটের মতে, “আমরা বন্য পরিবেশে বন্যপ্রাণীর প্রতি ভালোবাসা জাগাতে চাই, যা আমাদের নিজেদের উঠোনেও বিদ্যমান।
আমরা আশা করি, প্রত্যেক দর্শক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে তাদের নিজ নিজ এলাকায় অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত হবে।”
সোনালী সিংহ-লেজযুক্ত ট্যামারিনদের সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
১৯৭০-এর দশকে এদের সংখ্যা ছিল মাত্র ২০০-এর কম।
তবে চিড়িয়াখানা এবং অ্যাকোয়ারিয়ামগুলোর আমেরিকান এসোসিয়েশন (Association of Zoos and Aquariums)-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের ফলে বর্তমানে এদের সংখ্যা ৫,০০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এই সাফল্যের পেছনে চিড়িয়াখানাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
নতুন এই আবাসস্থলে দর্শকদের জন্য ফ্লোরিডার স্থানীয় গাছপালাও রোপণ করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরেছে এবং একইসাথে মানুষকে তাদের বাড়িতেও স্থানীয় গাছ লাগাতে উৎসাহিত করছে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশ সুরক্ষার এই ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্যও শিক্ষণীয় হতে পারে।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন চিড়িয়াখানা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলো পরিবেশ সুরক্ষায় আরও বেশি সক্রিয় হতে পারে।
সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস