শিরোনাম: প্রযুক্তি শিক্ষার আলো: সিলিকন ভ্যালির প্রবীণদের ডিজিটাল বিশ্বে পথচলা।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে দ্রুতগতিতে। এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অনেক সময় প্রবীণ নাগরিকেরা পিছিয়ে পড়েন।
উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে এমনই একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেখানে তরুণ প্রজন্মের সহায়তায় প্রবীণদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে।
সিলিকন ভ্যালির ১৭ বছর বয়সী জ্যাকব শাউল-এর ‘Mode to Code’ নামক একটি প্রোগ্রাম, এখানকার প্রবীণ নাগরিকদের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কোডিং শেখানোর আগ্রহ থেকে শুরু করে, শাউল এখন এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বয়স্কদের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), স্মার্টফোন ব্যবহার এবং অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন।
এই প্রোগ্রামের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, প্রজন্মের মধ্যেকার ডিজিটাল বিভাজন দূর করা। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধিতে বয়স্কদের সহায়তা করা এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা।
শুধু প্রযুক্তি ব্যবহারের কৌশল শেখানোই নয়, এই প্রোগ্রামটি প্রবীণ নাগরিকদের অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করতেও সাহায্য করে। বর্তমানে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে, তাই স্ক্যাম থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়।
প্রোগ্রামের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেন ১৭ বছর বয়সী আইদিন খালেলি। তিনি মনে করেন, প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান না থাকার কারণে অনেক মানুষ পিছিয়ে পড়ছে।
তাদের কথা মাথায় রেখে, সহজ ভাষায় প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় শেখানো হচ্ছে।
প্রবীণ নাগরিক এড ক্যাপলান-এর মতে, এই প্রোগ্রামটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে অনলাইনে প্রতারণার হার বাড়ছে।
তাই, এই প্রোগ্রামটি তাদের অনলাইন জগৎ সম্পর্কে সচেতন থাকতে সাহায্য করে।
বর্তমানে, আমেরিকাতে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি ডলার হারাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, ‘Mode to Code’ প্রোগ্রামটি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য খুবই উপযোগী।
এই প্রোগ্রামটি শুধু প্রযুক্তি শিক্ষাই দেয় না, বরং এটি বয়স্কদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতেও সহায়তা করে। এর মাধ্যমে তারা একে অপরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যেও উপকারী।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উন্নত দেশগুলোর মতো, বাংলাদেশেও বয়স্ক নাগরিকদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এর ফলে তারা ডিজিটাল দুনিয়ায় আরও সক্রিয় হতে পারবে এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধাগুলো গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও, অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এমন প্রোগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন