টেক্সাসের একটি ইয়োগার্ট শপে ১৯৯১ সালে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড, যা দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত ছিল, অবশেষে নতুন মোড় নিয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে যে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রবার্ট ইউজিন ব্রাশার্স নামের এক ব্যক্তি। ব্রাশার্স ১৯৯৯ সালে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের সময় আত্মহত্যা করেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল অস্টিন শহরে, যেখানে “আই কান্ট বিলিভ ইট’স ইয়োগার্ট” নামের একটি দোকানে চার কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ১৩ বছর বয়সী অ্যামি আয়ার্স, ১৭ বছর বয়সী এলিজা থমাস, এবং ১৭ ও ১৫ বছর বয়সী দুই বোন, জেনিফার ও সারা হারবিসন। ঘটনার পর দোকানটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার দিন দোকান বন্ধ হওয়ার সময় পিছনের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে কেউ এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এরপর তারা মেয়েদের হাত বেঁধে, মুখ চেপে ধরে গুলি করে হত্যা করে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই হত্যাকাণ্ডের কিনারা করা সম্ভব হয়নি।
তদন্তে জানা গেছে, ব্রাশার্স এর আগে আরও কয়েকটি রাজ্যে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালে সাউথ ক্যারোলিনায় একজন নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ১৯৯৮ সালে মিসৌরিতে মা ও মেয়েকে গুলি করে হত্যার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে ছিল। এছাড়াও, ১৯৯৭ সালে টেনেসিতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের সঙ্গেও তার ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে।
এই ঘটনার পর, ১৯৯৯ সালে ব্রাশার্স মিসৌরির কেনেটে একটি হোটেলে পুলিশের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হন এবং পরে আত্মহত্যা করেন।
ঘটনাটি নতুন করে সামনে এসেছে যখন সম্প্রতি এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে “দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডার্স” নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। এর পরেই পুলিশ ব্রাশার্সকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চিহ্নিত করে।
এর আগে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজন, রবার্ট স্প্রিংস্টিন ও মাইকেল স্কট, ঘটনার সময় কিশোর ছিল। তারা প্রথমে দোষ স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করে। ২০০৯ সালে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই মামলার তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস