আতঙ্ক! ট্রাম্পের ভ্যাকসিন, অটিজম ও হেপাটাইটিস বি নিয়ে মিথ্যা তথ্য ফাঁস

শিরোনাম: ট্রাম্পের ভ্যাকসিন সংক্রান্ত ভুল তথ্য: বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ ও বাংলাদেশের জন্য জরুরি বার্তা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভ্যাকসিন, অটিজম এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন, যা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এই নিবন্ধে ট্রাম্পের করা বিভিন্ন দাবির সত্যতা যাচাই করা হলো এবং এর পেছনের বিজ্ঞানসম্মত তথ্য তুলে ধরা হলো, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য জানা জরুরি।

ট্রাম্পের করা প্রধান অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল শিশুদের এমএমআর (MMR – Measles, Mumps, Rubella) ভ্যাকসিন দেওয়া এবং হেপাটাইটিস বি-এর ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল ধারণা দেওয়া। তিনি এমএমআর ভ্যাকসিনকে আলাদা করে দেওয়ার কথা বলেন, যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি নিরাপদ এবং কার্যকর। এই ভ্যাকসিন শিশুদের হাম, মাম্পস এবং রুবেলা রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC)-এর মতে, এই ভ্যাকসিন বহু বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এর কোনো ক্ষতিকর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ট্রাম্প আরও বলেন, হেপাটাইটিস বি-এর ভ্যাকসিন শিশুদের জন্মের পরপরই দেওয়া উচিত নয়, বরং ১২ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। তবে, চিকিৎসকরা বলছেন, নবজাতকদের জন্য এই ভ্যাকসিন খুবই জরুরি।

কারণ, জন্মের সময় মা থেকে শিশুর শরীরে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। হেপাটাইটিস বি লিভারের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে এবং শিশুদের মধ্যে এর জটিলতা বেশি।

ট্রাম্প শিশুদের দেওয়া ভ্যাকসিনের সংখ্যা নিয়েও ভুল তথ্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, শিশুরা নাকি ৮০টির মতো ভ্যাকসিন পায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের সাধারণত জন্মের পর থেকে ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০টির মতো ইনজেকশন দেওয়া হয়।

এছাড়াও, ট্রাম্প অটিজম এবং এর বিস্তার সম্পর্কেও কিছু ভুল ধারণা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, অ্যামিশ সম্প্রদায়ের মধ্যে অটিজম নেই।

কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, এই দাবি সঠিক নয়। অটিজম একটি জটিল বিষয় এবং এর কারণ এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে, এটি কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

ট্রাম্পের আরেকটি দাবি ছিল, কিউবায় নাকি অটিজম নেই। যদিও কিউবায়ও অটিজম শনাক্ত হয় এবং এর জন্য বিশেষায়িত স্কুল ও স্বাস্থ্য পরিষেবা বিদ্যমান।

তবে, সেখানকার শনাক্তকরণের হার কম হওয়ার কারণ হতে পারে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং রোগ নির্ণয়ের সীমাবদ্ধতা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুল তথ্যের কারণে অনেক মানুষ ভ্যাকসিন নিতে দ্বিধা বোধ করতে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

তাই, নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের জন্য সবসময় বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *