উত্তর ক্যারোলিনার পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত একটি ছোট শহর, ওল্ড ফোর্ট। একসময় এই শহরের প্রধান পরিচিতি ছিল আসবাবপত্র তৈরির কারখানা।
কিন্তু সেই পরিচয় বদলে যাওয়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকৃতির রুদ্র রূপ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় হেলেন।
আর তাতেই যেন ওল্ড ফোর্টের পর্যটন নির্ভর ভবিষ্যতের স্বপ্ন খানখান হয়ে যায়।
আসলে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ছিল, পুরোনো এই শহরটিকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা। বিশেষ করে যারা পাহাড় ভালোবাসেন এবং যারা বাইকিং করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য একটি আদর্শ স্থান হিসেবে ওল্ড ফোর্টকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল।
এখানকার লাল মাটির পথগুলো বাইকের ট্রেইলের জন্য খুবই উপযোগী। ‘ফ্লোটলাইফ ফেস্ট’-এর মতো ওয়ান হুইল বোর্ড বিষয়ক উৎসবগুলিও সেখানে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু বিধিবাম! ঘূর্ণিঝড় হেলেনের তাণ্ডবে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়। নদীর জল উপচে জনপদ প্লাবিত হয়, রাস্তাঘাট ভেঙে যায়, আর পর্যটকদের জন্য তৈরি হওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
শহরের অনেক দোকান এখনো পর্যন্ত খোলেনি, আর কিছু বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
ওল্ড ফোর্ট-এর বাইকের দোকান মালিক, চ্যাড শোনয়ার। তিনি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা) ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া, ‘ফুটহিলস ওয়াটারশেড’ নামক একটি পর্বত বাইকিং কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন অবকাঠামোও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা) ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
সেইসঙ্গে গত বছরের ফল-পর্যটন মৌসুম থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
তবে, এত ক্ষতির পরেও এখানকার মানুষ হাল ছাড়েনি। ধীরে ধীরে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। শহরের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামতের কাজ চলছে, দোকানগুলো আবার খুলছে।
পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে স্থানীয় উদ্যোক্তারা নতুন করে পরিকল্পনা করছেন। যদিও ব্লু রিজ পার্কওয়ের কিছু অংশ এখনো বন্ধ রয়েছে, যা পর্যটকদের আগমনকে কিছুটা হলেও ব্যাহত করছে।
ওল্ড ফোর্টের এই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে তারা আবারও তাদের স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে।
তাদের এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে, মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তিই পারে যেকোনো দুর্যোগকে জয় করতে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস