রবিবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় কিয়েভে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একটি ১২ বছর বয়সী শিশুও রয়েছে।
এছাড়াও, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন। কিয়েভ সহ আরও কয়েকটি শহরে এই হামলা চালানো হয়। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপির।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া ভোর থেকে ব্যাপক সংখ্যায় ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায়।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎসকো জানিয়েছেন, শহরের আবাসিক ভবন, বেসামরিক অবকাঠামো, একটি চিকিৎসা কেন্দ্র এবং একটি কিন্ডারগার্টেন এই হামলার শিকার হয়েছে। কিয়েভের কেন্দ্রে বিস্ফোরণের ফলে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়।
হামলার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে কিয়েভের কেন্দ্র থেকে অনেক দূরেও এর প্রভাব অনুভূত হয়েছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি রেলস্টেশনে আশ্রয় নেওয়া মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। এসময় সেখানে অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গানফায়ারের শব্দ শোনা যায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষের প্রাক্কালে রাশিয়ার এই ধরনের আক্রমণ তাদের আসল উদ্দেশ্যকে আবারও প্রকাশ করে।
জেলেনস্কি আরও জানান, কিয়েভ ছাড়াও ঝাপোরিঝঝিয়া, খমেলনিটস্কি, সুমি, মাইকোলাইভ, চেরনিহিভ এবং ওডেসা অঞ্চলে হামলা চালানো হয়েছে।
ঝাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলের প্রধান ইভান ফিওদোরভ জানান, এই অঞ্চলের রাজধানী শহরে হামলায় তিনজন শিশুসহ ২৭ জন আহত হয়েছে এবং বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, পোল্যান্ড সীমান্তেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পোলিশ সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার হামলার ঘটনার পরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে।
সম্প্রতি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ এনেছে। এর মধ্যে পোল্যান্ডের আকাশে রাশিয়ার ড্রোন প্রবেশ এবং এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের মতো ঘটনাও রয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে বলেন, তার দেশ ইউরোপকে আক্রমণ করার কোনো পরিকল্পনা করে না।
তবে, কোনো আগ্রাসনের শিকার হলে তারা এর জবাব দেবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের ছোড়া ৪১টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
এই হামলার ফলে কিয়েভের সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রিয়জনদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তারা। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস